সজিবুল ইসলাম,ডোমকল,আপনজন: দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পরে স্কুলের তালা খোলার নির্দেশ দেন সরকার তার পরে একাধিক বিধিনিষেধ জারি থাকে।নবম দশম একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের নিয়ে সপ্তাহে চার দিন পাঁচ দিন তার উপরে স্কুলে আসার সময় ভিন্ন এই ভাবে চলল কয়েক মাস স্কুল।
স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার খুবই কম হওয়ায় স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকা মিলে দুয়ারে শিক্ষক চালু করেন। এবং পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের ও অভিভাবকদের বুঝিয়ে কোনরকমে স্কুল আসা শুরু করেছিল ।তার পরে আবারো গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতবর্ষে বাংলায় করোনা তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়।আর তার ফলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলতে থাকলে রাজ্য সরকার আবারও নতুন বছরের শুরুতেই করোনা বিধিনিষেধ ঘোষণা করেন।তার মধ্যে স্কুলের পঠন পাঠান বন্ধ করার ঘোষণা করেন।
এই পরিস্থিতি কেও টোটো চালাচ্ছেন ,আবার বিভিন্ন দোকানে কাজ করছেন।কেও বা ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজের জন্য পাড়ি দিয়েছে।
আর স্কুল বন্ধ থাকায় মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গি ব্লকের সাদিখাঁন দেওয়ার বিদ্যানিকেতনের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র হালিম আনসারী কে গ্রামে গ্রামে ফেরি করতে দেখা গেলো।
কেনো ফেরি করছো উত্তর এসলো “কি করবো স্কুল বন্ধ পড়াশোনা কিছুই হচ্ছে না” বাড়িতে বসে থেকে কি করবো বাবার বয়স হচ্ছে রাজমিস্ত্রির কাজ সেই ভাবে করতে পারছে না আর।বসে না থেকে কিছু অর্থ উপার্জন হলে সংসার টা ভালো চলবে।পরিবারে বাবা মা সহ বোন ভাই রয়েছেন।দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় এবার আর স্কুলে ভর্তি হয়নি বলেও জানালেন হালিম আনসারী।
গ্রামের এক মহিলা জানান কি করবে বাড়িতে বসে থেকে ব্যবসা করছে ভালই আছে কোনো ঝামেলার মধ্যে পড়ছে না।আর বাড়ি তে বসে থেকে আমার দুই ছেলে সব সময় নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করতেই থাকছে ।আর স্কুল থাকলে বেশি সময় পড়াশোনায় কেটে যায় ।স্কুল বন্ধ থাকায় টিউশন করতে যাচ্ছে না।তাই যেকোনো কাজের মধ্যে থাকায় ভালো বলে জানাচ্ছেন।
সাদিখাঁন দেয়ার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোলাম মুর্তজা যাচ্ছেন এটা খুবই দুর্ভাগ্য জনক ঘটনা যে দীর্ঘ সময় ধরে স্কুলের পঠন পাঠান বন্ধ রয়েছে। সেই পরিস্থিতে ছাত্র ছাত্রীদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। ছেলেরা বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে,মেয়েদের অনেক পরিবার বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে, সরকারি বিধিনিষেধ মেনে স্কুলের পঠন পাঠান শুরু হলে ভালো হয় বলে জানাচ্ছেন।
একি ভাবে ফরিদপুর হাই স্কুলে প্রাক্তন সহকারী প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেন যাচ্ছেন যে যেখানে প্রায় সমস্ত স্থান খোলা থাকছে সেই পরিস্থিতে স্কুল খুলে সরকারি নির্দেশ মেনে ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আবার পঠন পাঠান শুরু করা হোক বলে জাননা।
জলঙ্গী ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন যে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতায় প্রমাণ স্কুল কলেজ বন্ধ করে রাখার বিষয়ে।যেখানে নির্বাচন করতে পারছে সেখানে স্কুল কলেজ কেনো বন্ধ ।
একি ভাবে সিপিআইএম প্রাক্তন বিধায়ক ইউনুস সরকার রাজ্য সরকারের গাফিলতির করায় তুলে ধরেন।সরকার চাইলে স্কুল কলেজ চালু রাখতে পারতেন।কিন্তু সেটা না করে সিনেমা হল থেকে শুরু করে শপিং মল সব ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে।শুধু স্কুলের ক্ষেত্রে কোনো পরিকল্পনা নেই সরকারের।
শিক্ষা মহলের বক্তব্য যদি স্কুল বন্ধ থাকে তাহলে শিক্ষা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে গ্রাম বাংলার ছেলে মেয়েরা।আর আগামী প্রজন্মের বড়ো ক্ষতি হয়ে যাবে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct