আপনজন ডেস্ক: আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান প্রশাসনকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত আফগান প্রধানমন্ত্রী মোল্লাহ হাসান আখুন্দ। বুধবার রাজধানী কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে আফগান সরকারকে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতি দিতে বিশ্বের সব সরকারের কাছে তিনি অনুরোধ জানান।
এছাড়া আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সব ধরনের শর্ত পূরণ করা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন তিনি। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। মার্কিন সামরিক বাহিনীসহ সকল বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের মুখে গত বছরের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান গোষ্ঠী। এরপর সেপ্টেম্বরের শুরুতে একটি অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন করে তারা। সেই সরকারের অন্যতম শীর্ষ পদে বসেন মোল্লাহ হাসান আখুন্দ। যদিও এরপর থেকে বড় কোনো সম্প্রচারমাধ্যমে আর দেখা যায়নি তাকে। গত সেপ্টেম্বরের পর বুধবারই প্রথম বৃহৎ পরিসরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন মোল্লাহ আখুন্দ। কাবুলে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সকল দেশের সরকার, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর কাছে আমার আবেদন, আপনারা (আফগানিস্তানকে) স্বীকৃতি দেওয়া শুরু করুন।’
মোল্লা হাসান আখুন্দ ও তালেবান প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জাতিসংঘের কর্মকর্তারাও বুধবারের এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তালেবান আফগানিস্তানে অর্থ প্রবেশের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ শিথিলের আহ্বান জানায়।
একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়ের ব্যবস্থা না করায় দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
হাসান আখুন্দ বলেন, ‘(সংকট কাটাতে) স্বল্পমেয়াদী সহায়তা কোনো সমাধান নয়। বিদ্যমান সমস্যাগুলো মৌলিকভাবে সমাধানের একটা পথ আমাদেরকে খোঁজার চেষ্টা করতে হবে।’
এমনিতেই দশকের পর দশক ধরে যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত আফগানিস্তান। গত আগস্টে তালেবান কাবুলের ক্ষমতা দখলের পর থেকে সেই পরিস্থিতি দিনে দিনে কেবল খারাপই হয়েছে। আফগানিস্তানে বর্তমানে যা আর্থিক পরিস্থিতি, তাতে এই প্রবল শীতে লাখ লাখ মানুষ প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাবারের অভাবের মধ্যে দিনযাপন করছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনও পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাও আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়।
আরও পড়ুন: