আপনজন ডেস্ক: করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।একই সঙ্গে সমানভাবে সবাই ওমিক্রনেও আক্রান্ত হচ্ছেন। নতুন বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হচ্ছে মানুষকে। এ অবস্থায় বিশ্বের অনেক দেশ সম্প্রতি আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত নীতি পরিবর্তন এনেছে। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে সামনে আসছে, পরিবারের কোনো সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বাকিদের কী করণীয়।এ বিষয়ে মেডিকেল বিশ্লেষক ও যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিল্কেন ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের স্বাস্থ্য নীতিমালা ও ব্যবস্থাপনার অধ্যাপক ড. লিয়ানা ওয়েনের মতামত প্রকাশ হয়েছে। ড. ওয়েন জানান, প্রথমে আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের মধ্যে পার্থক্য জানাটা খুবই জরুরি। এ দুইটি বিষয়ে নির্দেশনাও সম্পূর্ণ ভিন্ন।করোনা শনাক্ত হলে তাকে আইসোলেশনে থাকতে হবে। পরিবারের যারা আক্রান্ত হননি তাদের কাছ থেকে আক্রান্ত ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকবেন। এটাই আইসোলেশন।
যখন ধারণা করছেন আপনি করোনা ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছেন, কিন্তু এখনো পরীক্ষার মাধ্যমে তা শনাক্ত হয়নি বা উপসর্গ নেই, সে ক্ষেত্রে আপনি কোয়ারেন্টিনে যাবেন। যিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, হয়তো বাকিদের দেহেও ইতোমধ্যে সংক্রমণ হয়েছে। তাই সবার পরীক্ষা করানো জরুরি।পরিবারের সবাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে তাদের একজন আরেকজনের থেকে আইসোলেশনে থাকার প্রয়োজন নেই। কারণ তাদের একেকজনের ভিন্ন স্ট্রেইনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। সুতরাং একে অপরকে নতুন করে সংক্রামিত করার সম্ভাবনাও খুবই কম। তবে অবশ্যই, পুরো পরিবারকে অন্য কোনো পরিবারের মানুষের থেকে আলাদা থাকতে হবে। ধরুন শিশুটির দুই জন অভিভাবক আছেন। তাদের উভয়ই দুই ডোজ টিকা ও বুস্টার ডোজও নিয়েছেন এবং মোটামুটি সুস্থও আছেন। তাদের জন্য ঝুঁকি কম। কিন্তু একই পরিবারে যদি একাধিক শিশু থাকে যে টিকা নেয়নি, তাহলে তাদেরও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত শিশু ও একজন অভিভাবক আলাদা হয়ে আইসোলেশনে থাকতে পারেন। পরিবারটি দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে একটি ভাগে আক্রান্ত শিশু ও একজন অভিভাবক এবং অন্য ভাগে অপর শিশু ও অপর অভিভাবক থাকবেন।
আইসোলেশনে থাকাকালীন একে অপরের সংস্পর্শে আসা যাবে না। যদি সম্ভব হয়, বাড়ির ভেতরে আলাদা আলাদা অংশে তাদের থাকা উচিত। তাদের আলাদা ঘরে ঘুমানো উচিত এবং টয়লেটও আলাদা হওয়া উচিত। এমন কী, একই ঘরে খাওয়াও উচিত না। যে অভিভাবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর দেখাশোনা করছেন, তার উচিত সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকা। যাতে তার নিজের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কিছুটা কমে যায়। ঘরে সব সময় বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করলে তাতে উপকার হতে পারে। যখনই সম্ভব, তখনই দরজা জানালা খুলে রাখা এবং খুবই সতর্কতার সঙ্গে হাত ধোয়া আর সার্বক্ষণিক মাস্ক পরার অভ্যাস তৈরি করাও কাজে আসতে পারে।করোনা থেকে মুক্ত হলে আরও পাঁচ দিন সব সময় মাস্ক পরে থাকতে হবে। অর্থাৎ, প্রথম পাঁচ দিন আপনাকে পুরোপুরি আইসোলেশনে থাকতে হবে এবং পরবর্তী পাঁচ দিন আপনি বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন, কাজে যেতে পারবেন, বাজারে যেতে পারবেন এবং অন্যান্য কাজ করতে পারবেন। কিন্তু এ সময়টায় আপনাকে খুবই ভালো মানের মাস্ক পরে বের হতে হবে। এমন কোনো জায়গায় যাওয়া উচিত নয় যেখানে আপনাকে মাস্ক খুলে রাখতে হবে। যেমন: রেস্তোরাঁ বা এমন কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান যেখানে মাস্ক খুলে ছবি তোলার অনুরোধ আসতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct