আপনজন ডেস্ক: শখ মানুষের চিত্ত-বিনোদনের অন্যতম উপাদান। মানুষ তার পেশা বাদে অন্য যে পেশায় কাজ করে আনন্দ লাভ করে তাই শখ৷ শখ করে কোন কিছু করার মধ্যে যে আনন্দ তা আর অন্য কোন কিছুতে নেই। অনেকের অনেক ধরনের শখ থাকে। সাধারণত অবসর সময়েই শখের কাজ গুলো করা হয়ে থাকে। কারো বাগান করতে ভালো লাগে, কারো বই পড়তে ভালো লাগে আবার কারো ভালো লাগে স্ট্যাম্প সংগ্রহ করতে, খেলাধুলা করা বা বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে করতে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শখগুলিতে বিনিয়োগের মানুষের প্রচেষ্টা বেড়েছে। কিন্তু আপনার শখ যদি আপনার অভ্যাসগুলোকে কিছুটা প্রভাবিত করে অসাধারণ কিছু অভ্যাস তৈরী করতে সহায়তা করে তাহলে কেমন হয়? এমনি কয়েকটি শখের কথা নিয়ে আজকে আলোচনা করব, যেগুলো শুধু আপনাকে আনন্দই দিবে না পাশাপাশি অসাধারন কিছু অভ্যাস তৈরী করতেও সাহায্য করবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিরত থেকে বই পড়ুন বেশি: বর্তমান হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। এই সময়ে আমরা আমাদের অবসর সময়ের প্রায় পুরোটাই ইন্টারনেটে শুধু স্ক্রলিং করেই কাটিয়ে দিয়। এরফলে শুধু যে আমাদের সময়ের অপচয় হয় তা নয়, এর থেকে না পারি নতুন কিছু জানতে বা নতুন কিছু শিখতে। কিন্তু এই সময়টা যদি একটা বই পড়ি তাহলে আমাদের জ্ঞানের পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
এর মানে এটা নয় যে আপনাকে একেবারে ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনি অবশই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করবেন তবে তা সীমিত সময়ের জন্য। ইন্টারনেট ব্যবহারের সময়ে সঙ্গে রাখুন কোন বই বা ম্যাগাজিন। ইন্টারনেটে স্ক্রলিং করার মাঝে মাঝে একটু বই খুলুন এবং পড়তে শুরু করুন। দেখবেন ধীরে ধীরে ইন্টারনেট আসক্তি কমতে শুরু করেছে এবং বই পড়ার আগ্রহ বাড়তে শুরু করেছে।
জিমকে বিদায় জানিয়ে ব্যায়াম করুন বেশি করে: জিম করতে অনেক বেশি মানসিক বলের প্রয়োজন হয়। এর ফলে দেখা যায় অনেকেই জিমের মেম্বারশিপ তো নিয়েছেন কিন্তু কয়েক দিন যাওয়ার পর আর যাওয়া হয়ে উঠে না। ফলে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে মেম্বারশিপ কার্ড।
তাই জিমের মেম্বারশিপ না নিয়ে একটি লোকাল কমিউনিটিতে যোগ দিন। যেখানে আপনি সাইক্লিং, কিক বক্সিং, ব্যায়াম এগুলো একসঙ্গে করতে পারবেন, যাতে জিমের মতোই সময় ব্যয় হবে।সেইসঙ্গে আপনার আত্মশক্তি ও মনোবল বাড়াবে। আরেকটি বড় সুবিধা হল এই সকল কমিউনিটি হতে আপনার একটি শখ অভ্যাসে পরিণত হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান, রান্না করতে শিখুন: স্বাস্থ্যই হচ্ছে সকল সুখের মুলে। শখ পূর্ণ করতে স্বাস্থ্য ভালো রাখতেই হবে। আর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খেতে হবে ভালো খাবার। তার মানে এই নয় যে সব সময় ভালো খাবার খোয়ার জন্যে যে কোন রেস্টুরেন্টে যেতে হবে। বাড়িতে বানানো খাবারই বেশি বেশি করে খাওয়ার অভ্যাস তৈরী করুন। সেই সঙ্গে কাজের মাঝে সময় বার করে নিজের পছন্দের খাবার নিজে বানাতে শিখুন। আপনি রান্না করে পরিবারের অন্য সদসদেরও খাওয়াতে পারবেন। আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য জন্য কোন খাবারগুলো সবচেয়ে ভালো বা স্বাস্থ্যকর তা আপনার চেয়ে ভালো আর কেউ জানে না।
প্রকৃতির সঙ্গে সময় ব্যয় করুন: আমরা অনেকেই গভীর রাত করে ঘুমাই ফলে সকালের সূর্যোদয় আর দেখা হয়ে ওঠে না। সেই সঙ্গে থাকে আমাদের আলস্য। আমাদের বেশিরভাগ খারাপ অভ্যাস গুলোর জন্য এই আলস্য বহু অংশে দায়ী। আমরা যদি অনলাইনে সময় কম ব্যয় করতে চাই, ভালো খাবার খেতে চাই, স্বাস্থ ভালো রাখতে চাই তাহলে আমাদের এই আলস্য কাটিয়ে উঠতে হবে, একই সঙ্গে প্রকৃতির মধ্যে সময় ব্যয় করতে হবে। এর জন্য আশেপাশের কোনো পার্কে অথবা খোলামেলা কোন জায়গায় গিয়ে হাঁটে পারেন ওহাব পার্কে গিয়ে বেঞ্চে বসে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন। প্রয়োজনে পার্কে যাওয়ার সময়ে সঙ্গে কোন বই বা ম্যাগাজিন নিয়ে যেতে পারেন। সেখানে বসে পড়ুন।যতটা পারবেন প্রকৃতির মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর চেষ্টা করুন। ছুটির দিনগুলোতে পরিবারকে নিয়ে গাছপালা ঘেরা বা কোন উদ্যান থেকে ঘুরে আসুন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct