জৈদুল সেখ,সালার,আপনজন: নতুন বছরে মানবিকতার নজির গড়লেন পুলিশ প্রশাসন। স্বামী স্ত্রী দুজনেই অন্ধ! চোখে দেখতে পান না। ট্রেনে ভিক্ষাবৃত্তি করে কোনো রকমের দিন গুজরান। তাঁদের নির্দিষ্ট কোনো বাসস্থান নেই। মুর্শিদাবাদের সালার থানার অন্তর্গত টিয়া গ্রামে রেল ইস্টেশনের পাশেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করেন অন্ধ দম্পতি কানাই হালদার এবং কণিকা হালদার। সেই অসহায় অন্ধ দম্পতির বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিলেন সালার থানার ওসি ইন্দ্রনীল মহান্তের নেতৃত্বে সালার থানার পুলিশ কর্মীবৃন্দ। ট্রেনে এই অন্ধ দম্পতি গান শুনিয়ে ভিক্ষা করত। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসে বিষয়টি। প্রশাসনের তৎপরতায় তাদের সমস্যা জানতে চাওয়া হয় এবং সালার থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক, ইন্দ্রনীল মহন্ত, পুরো বিষয়টি অবগত হয়ে এই দৃষ্টিহীন দম্পতির থাকার জন্য টিনের বাসস্থানের ব্যবস্থা করেন। সঙ্গে তাদের জামাকাপড়, একমাসের সবজি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করা হয়। পুলিশ যে শুধু চোর ডাকাত গুন্ডা দমন করে তা নয়, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবাও করেন তার দৃষ্টান্ত দেখা গেল মঙ্গলবার কান্দি মহকুমার অন্তর্গত সালার থানায়। যদিও এ বিষয় নিয়ে ওসি ইন্দ্রনীল মহান্ত মন্তব্য করতে চাননি তবে বলেন, “আমি কেবল কর্তব্য পালন করেছি মাত্র, তাছাড়া এমন কাজের জন্য সাধারণ মানুষের সহযোগিতার প্রয়োজন।”
পুলিশের এই মহতী কাজে খুশি সালারর বিডিও আশিষ মন্ডল। তিনি বলেন,“পুলিশের পাশাপাশি তিনি মানবিকতার বড়ো পরিচয় দিয়েছেন, সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন রাখব আপনারা এই সমস্ত অসহায় মানুষের খোঁজ দিন, আমরা যথাসাধ্য সাহায্য করব।” প্রসঙ্গত এই দম্পতি, কাটোয়া আজিমগঞ্জ লোকাল ট্রেনে গান করে ভিক্ষাবৃত্তি করে কষে জীবন কাটাত। খোলা আকাশই তাদের ঘর বলে মনে করত। সালার থানার পক্ষ থেকে তাদের নতুন ঘর, কম্বল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তুলে দেন সালার থানার আধিকারিক ইন্দ্রনীল মহন্ত। এই শীতে মাথার নীচে ছাদ পেয়ে অনেকটাই আবেগপ্রবণ আনন্দিত হয়ে ওঠেন এই অন্ধ দম্পতি। তারা কখনও ভাবতে পারেননি যে নতুন বছরে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে এমন একটা উপহার পাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct