জিয়াউল হক,চুঁচুড়া,আপনজন: মানুষের মন পেতে মানুষকেই বিপদে ফেলা! ২০২০থেকে রাজনৈতিক দলগুলির এই চেনা ছবিই বারংবার প্রকাশ পাচ্ছে। যে দল মানুষের ভোটে জিতে সরকার নামক শীর্ষস্থানের পদে বসবে, সেই দলগুলিই বারংবার মানুষকে বিপদে ফেলতে সিদ্ধহস্ত। শনিবার চন্দননগর পুর নির্বাচনের নমিনেশন পর্ব আরও একবার সেটাই প্রমান করলো। এদিন সকাল ১১টা নাগাদ বাম প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কর্মীদের অপেক্ষায় সেই সময় অনেকটাই পিছলো। চন্দননগর শহরের ৩দিক থেকে তিন তিনটি মিছিল এসে বাগবাজার জিটি রোডে মিলিত হলো। জনমুখে প্রচারিতের ন্যায় সাংগঠনিক এই দলের লাল মিছিল যথেষ্ট সুশৃঙ্খল থাকলেও কোভিড বিধি কোন মান্যতা পায়নি। এদিন ২টি আসন বাদে মোট ৩১টি আসনে সিপিএম প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেয় চন্দননগর মহকুমা শাসক দপ্তরে। পায়ের নীচের মাটি খোঁজার লড়াই হলেও এদিন মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পিনাকী চক্রবর্তী বলেন মানুষ ভোট দিতে পারলে আমরা জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। অন্যদিকে আপনাদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়ায় বহু কর্মী উপস্থিত থাকলেও মানা হলো না কোভিড বিধি, এ প্রশ্নের উত্তরে পিনাকীবাবুর বক্তব্য আজ আমরা মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম তাই সেদিকে নজর দিতে পারিনি। তবে ভোট ময়দানের লড়াইয়ে আমরা কোভিড বিধির কথা মাথায় রাখবো। এদিকে এদিন চন্দননগর জ্যোতির মোড় থেকে ভারতীয় জনতা পার্টির ৩১ জন প্রার্থীকে নিয়ে বিজেপির মিছিল চন্দননগর মহকুমা শাসক দপ্তরে মনোনয়ন জমা দিতে আসে। বর্তমানে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের কর্মীরা এদিন ছিলো স্ব-মহিমায়। “জয় শ্রী রাম” ধ্বনী তুলে পদ্মফুলে ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার সহ বিজেপি জিন্দাবাদের মত স্লোগান দিতে দিতে মিছিল এগিয়ে চলে।
তবে বামেদের মত বিজেপিও কোভিড বিধি মানতে বাধ্য হয়নি। রাজ্য নেতা দীপাঞ্জন গুহ, হুগলী সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তুষার মজুমদার, যুব সভাপতি সুরেশ সাউরা উপস্থিত থাকলেও এদের কাউকেই মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। নেতাদের ন্যায় বেশীরভাগ কর্মীরাও মাস্কের ধার ধারেনি। বিজেপি নেতারা স্বমহিমায় চন্দননগর পুরনিগম জেতার ব্যাপারে আশাবাদী জানালেও কোভিড বিধি মানার বিষয়ে কোন কথাই বললেন না। প্রসঙ্গত এদিনই রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস করোনা আক্রান্ত হলেন, দিনকয়েক আগে করোনা ছুঁয়েছে কোলকাতার রাজপুত্র সৌরভ গাঙ্গুলিকেও। এরকম ভয়ানক পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলির অবাধেই লাগামহীন এই কার্যকলাপ, আর শুধু সাধারন মানুষের জন্য সরকারী বিধিনিষেধ আর কতদিন থাকবে? প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যায়!
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct