জৈদুল সেখ, কান্দি,মুর্শিদাবাদ,আপনজন: বড়দিনের সাজে সেজে উঠেছে শহরের সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল। বড় দিন মানেই মুখ মিষ্টি কেক দিয়ে। নামী দামী কোম্পানির কেকের দোকান থেকে শুরু করে পাড়ার মোড়ে মোড়ে স্থায়ী-অস্থায়ী দোকানে এখন রঙিন কেকের পসরা। বড়ো দিনের উৎসব মানেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শহর জুড়ে কেকের সঙ্গে আলোকসজ্জা তবে তা শহরের গণ্ডী টপকে পৌঁছে গিয়েছে জেলায় প্রত্যন্ত গ্রামেও।
বহরমপুর শহরে কেকের চাহিদা তো রয়েছেই। কান্দির বিভিন্ন এলাকায় কেকের চাহিদাও অনেকটাই বেশি। “জীবন্তি লাল চা কেকের স্টটলের” মালিক জসীমউদ্দীন বলেন, “স্থানীয় কেক থেকে শুরু করে নামীদামি কোম্পানির ছানা, মোয়া, ফলসহ একাধিক ভ্যারাইটিজ কেক পাওয়া যায় তাই দূর দূরান্তের ক্রেতা এখানে কেক কিনতে আসেন। তবে গতবছর লকডাউনের চাইতে এ বছর চাহিদা অনেকটাই বেশি। “
এই সব স্থানীয় বেকারির কাছে গ্রামের নিম্নবৃত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত ক্রেতারাই এদের ভরসা। ফলে বছর শেষে এই বেকারিগুলিতে ব্যস্ততা তুঙ্গে। তাছাড়া নলেন গুড়ের কেক তৈরিতে স্থানীয় বেকারি ব্যবসায়ীরা অনেকটাই এগিয়ে। যদিও গত বছরে লকডাইনের তুলনায় এ বছরে কেকের চাহিদা অনেকটাই বেশি বলে জানিয়েছেন কেক ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় বেকারির তৈরি কেকের চাহিদা বাড়ায় খুশি বেকারি মালিকরা। বহরমপুরের রাধারঘাট বেকারি জানান,’বড়দিনের জন্য এখন পর্যন্ত ছয় হাজার পাউন্ড কেক বিক্রি হয়েছে। এ বছর চাহিদা একটু বেশি থাকায় ফের নতুন করে কেক বানাতে হচ্ছে।’’ আর এক বেকারি কারবারী নিল মাধব দাস বলেন- ‘’আমাদের ভরসা গ্রামের নিম্নবিত্ত মানুষ। যাদের পঁচাত্তর বা একশো টাকা দিয়ে চকচকে মোড়কের ২০০ গ্রাম কেক কেনার ক্ষমতা নেই। এখনও কুড়ি থেকে পঁচিশ টাকায় তিনশো বা সাড়ে তিনশো গ্রাম ওজনের কেক শুধু বেকারিই দিতে পারে।’ ফলে বড় দিন উপলক্ষ্যে ব্যবসা বাড়ায় মুখে চওড়া হাসি মুর্শিদাবাদের স্থানীয় বেকারিদের।
উল্লেখ্য মুর্শিদাবাদ জেলাতেও এক সময় ছোট বড় মিলিয়ে কয়েকশো বেকারি ছিল। সেই বেকারির সংখ্যা কমে এখন সাকুল্যে ৩০-৪০ হবে। কারণ মানুষের চাহিদা ও ক্রয় ক্ষমতা বাড়ায় অনেকেই দামি ব্র্যান্ডের কেক পছন্দ করেন। কিন্তু প্রত্যন্ত মানুষের মুখে এখনও কম পয়সায় কেক তুলে দিচ্ছে স্থানীয় বেকারিগুলিই। কর্মী সংখ্যা কম হওয়ায় নাওয়া-খাওয়ার ফুরসৎ নেই বেকারি ককর্মীদের। করোনা মহামারীর কারণেও এবছর একটু কমদামী কেকের দিকে ঝুঁকছেন ক্রেতারা। ফলে মুর্শিদাবাদের স্থানীয় বেকারিগুলিতে এখন মরা গাঙে জোয়ার আসার মত অবস্থা। সব মিলিয়ে বড়োদিনের উৎসবে হাসি ফুঁটেছে ক্রেতা বিক্রেতাদের মুখে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct