নাজিম আক্তার,হরিশ্চন্দ্রপুর,আপনজন: সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য ‘কাটমানি’নেওয়া বা তোলাবাজির বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি রয়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের।
তারপরেও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে গরিব মানুষদের ঘর পাইয়ে দিতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে ‘কাটমানি’ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের মশালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নিলুফার ইয়াসমিন ও তাঁর স্বামী আবু সুফিয়ান এবং উপপ্রধান আবু ইসমাইল ও পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মনিরুল আলম সহ মোট চার জনের বিরুদ্ধে।
ওই চার জনের নামে বিডিও,এসডিও ও ডিএম অফিসে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন কমলাবাড়ি,সোনাপুর ও তালগাছি গ্ৰামের ১৪ জন উপভোক্তা।
উপভোক্তাদের অভিযোগ ২০১১ সালের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও কাটমানি দিতে না পারায় ঘর পেতে বঞ্চিত হতে হয়েছে।এমনকি পঞ্চায়েত থেকে রেজুলেশন করে ১২ জন উপভোক্তার নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান।
অপরদিকে অবস্থা সম্পন্ন ও সরকারি চাকরিজীবীদের নামে ঘর হয়েছে। তালিকায় কম সংখ্যক স্কোর থাকা সত্ত্বেও মিলছে না ঘর অথচ বেশিসংখ্যক স্কোর সম্পন্ন ব্যক্তিরা পেয়েছে ঘর।ওই চার জনের যোগসাজশে এই সব কর্মকাণ্ড হয়েছে বলে আক্ষেপের সুরে জানান বঞ্চিত উপভোক্তারা।
প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও হচ্ছে না কোনো সুরাহা। অভিযোগকারী মহম্মদ আসিকুল মিঁয়া নামে এক উপভোক্তা জানান ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা তালিকায় তাদের নাম রয়েছে।তারা কেউ ছোটোখাটো প্রান্তিক চাষী আবার কেউ দিনমজুর। তাদের চাহিদা মতো কাটমানি দিতে না পারায় ঘর পেতে বঞ্চিত রয়েছে।বেশ কিছু বাড়িতে কারও টালির ঘরের চাল,ছাদ ভাঙা,কোথাও বা দেওয়াল খসে পড়ছে। এদের বেশিরভাগই মাটির তৈরি বাড়িঘর। অভিযোগ জানাতেই একের পর এক হুমকির মুখে পড়তে হয় উপভোক্তাদের। দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকদের কাছে লিখিত আকারে আবেদন জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি। এবার তারা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান। এই ব্যাপারে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি সাংবাদিকের সামনে কিছু বলতে না চাইলেও তিনি জানান ঘর দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্যরা। ইনকোয়ারির ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করা হয়। তারা কেন ঘর পেতে বঞ্চিত হয়েছে তা শীঘ্রই তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দেন ।
প্রধান নিলুফার ইয়াসমিন কিছু বলতে না চাইলেও পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মনিরুল আলম জানান অভিযোগকারীরা সকলেই অবস্থা সম্পন্ন ব্যক্তি।তাদের পাঁকা বাড়ি রয়েছে। অনেকের আবার ট্রাক্টর রয়েছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী তারা ঘর পেতে পারে না।ইনকোয়ারির ভিত্তিতেই তাদের নামগুলি বাদ দেওয়া হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct