আপনজন ডেস্ক: কতক্ষণ একটা মানুষের ঘুমানো দরকার, তার সহজ উত্তর নেই। ঘুমের প্রয়োজনীয়তা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু সাধারণ পরিসর হলো- প্রতিরাতে সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। বয়স অনুসারেও এই পরিসরের কম-বেশি হতে পারে। একটি মানুষের জীবনকালের বিভিন্ন বয়সে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হয়।
আমেরিকার রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিরাতে কমপক্ষে সাত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত,কিন্তু প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনও এমনটা করে না। ঘুমের ঘাটতির সঙ্গে নানারকম দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি রয়েছে। ঘুমের অভাবে হৃদরোগ, রক্তনালীর রোগ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও স্মৃতিভ্রংশতার ঝুঁকি বাড়ে। মাত্র একদিনের ঘুমের ঘাটতি সুস্থতার ক্ষতি করতে পারে। যারা পর্যাপ্ত ঘুমায় না তাদের উদ্বেগ ও আকস্মিক মেজাজ পরিবর্তন বা বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ঝুঁকি বেশি। ঘুমের ঘাটতির স্বল্পস্থায়ী পরিণতি ও দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি উভয় রয়েছে। এ কারণে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রভূত গুরুত্ব রয়েছে।
শিশুরা বেশি ঘুমালে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। বরং এটাই ভালো। প্রথম বছরে শিশুরা ১৭ থেকে ২০ ঘণ্টা ঘুমাতে পারে। ৪ থেকে ১২ মাসের শিশুদের ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা ঘুমের দরকার আছে। এক থেকে তিন বছর বয়সী শিশুদের ১১-১৪ ঘণ্টা ঘুমানোর প্রয়োজন আছে। তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের ১০-১৩ ঘণ্টা এবং ছয় থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের ৯-১২ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। কিশোর-কিশোরীদের প্রতিরাতে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। শিশুরা বয়ঃসন্ধিতে উপনীত হলে দেরিতে ঘুমাতে পছন্দ করে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার জন্য সকাল সকাল জেগে ওঠতে হয়। ফলে তারা যে ঘুমের ঘাটতিতে থাকে। এটা তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কলেজ পড়ুয়া অনেকেরই চোখের নিচে ফোলা বা ঘুমের রেশ লেগে থাকে। এর কারণ, তারা গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকে। সকালে কাঁধে কোনোমতে ব্যাগটা ঝুলিয়ে চলে আসে। এমনকি তারা সকালের খাবারটা পর্যন্ত ঘরে খেতে চায় না। এমনটা দিনের পর দিন চলতে থাকলে স্বাস্থ্যের ওপর কেমন প্রভাব পড়বে তা সহজেই অনুমান করা যায়। চিকিৎসকরা এটাকে ভালো চোখে দেখেন না। কলেজ পড়ুয়া ও প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিরাতে সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct