সেক আনোয়ার হোসেন, নন্দীগ্রাম: নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। ভোট পরবর্তী হিংসায় নন্দীগ্রামে বিজেপি নেতা দেবব্রত মাইতি খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল সুফিয়ানের।কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের তদন্তে তলবও করা হয়েছে সুফিয়ানকে। তবে তিনি বারবারই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়েছেন বলে অভিযোগ। এর পরে গ্রেফতারি এড়াতে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানান শেখ সুফিয়ান। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চের নির্দেশে মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তাতেই একাধিক অভিযোগ রয়েছে শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে। সিবিআই এদিন আদালতে দাবি করে,শেখ সুফিয়ান জামিন পেলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নষ্ট করে দিতে পারেন।
বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ এই আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় সোমবার। একদিকে যেমন শেখ সুফিয়ানের আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ আদালতের কাছ থেকে তিনি পেয়েছিলেন, সেটিও এদিন প্রত্যাহার করে নেয়। প্রসঙ্গত,এর আগে কলকাতা হাইকোর্টই শেখ সুফিয়ানকে অন্তর্বতী রক্ষাকবচ দিয়েছিল। একই দিনে জোড়া ধাক্কা খেলেন পূর্ব মেদিনীপুরের এই তৃণমূল নেতা।নিঃসন্দেহে আদালতের এদিন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ। কার্যত ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় শেখ সুফিয়ানকে গ্রেফতার করায় কোনও সমস্যা থাকছে না। এর আগে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় শেখ সুফিয়ানকে জেরা করে সিবিআই। তাঁর বয়ান রেকর্ডও করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ জমা পড়ে সিবিআইয়ের কাছে। সোমবার মামলার শুনানি চলাকালীন সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়,মামলার যা পরিস্থিতি তাতে শেখ সুফিয়ানকে রক্ষাকবচে রাখলে সমস্যা হবে। এরপরই বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ সেই রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে,অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের বক্তব্য ছিল, “সিবিআই তাকে নোটিস পাঠায়। তিনি ওই ঘটনায় জড়িত নই। তবুও তাকে যখন ডাকা হয়েছে তখন যেতেই হবে। গোটাটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। সেইজন্যই তাক ডেকে পাঠানো হয়েছে।” পাল্টা বিজেপি নেতা প্রলয় পালের দাবি ছিল, “নির্বাচনের পর দিন চিল্লোগ্রামে দেবব্রত মাইতির বাড়ি গিয়ে তাঁকে মারধর করেছিল তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। গুরুতর জখম অবস্থায় দেবব্রতকে কলকাতায় নিয়ে গেলে দু’দিন বাদে মৃত্যু হয় তাঁর। নন্দীগ্রাম থানায় সেই মুহূর্তে মামলা করা যায়নি। কারণ তৃণমূলের লোকেরা চারদিক ঘিরে রেখেছিল। পুলিশও নিষ্ক্রিয় ছিল। পরে মানবাধিকার কমিশন নন্দীগ্রামে এলে তাঁদের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই ঘটনায় সেখ সুফিয়ান-সহ নন্দীগ্রামের বেশ কয়েক জন প্রথম সারির তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct