আপনজন ডেস্ক: সুন্দরবনের ভেতরে প্রায় ৮১ বর্গমাইলের সর্ববৃহৎ শুঁটকিপল্লী দুবলা। বঙ্গোপসাগর উপকূলে পাঁচটি চর নিয়ে এই পল্লীর অবস্থান। চর ঘেঁষে বয়ে গেছে কুঙ্গা ও মরা পশুর নদ। মোংলা ও শরণখোলা উপজেলার লোকালয় থেকে ৭৫ নটিক্যাল মাইল দূরের চরটিতে প্রতিবছর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ বা নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে মাছ আহরণ ও শুঁটকি তৈরির কাজ। বছরের বাকি সময় থাকে প্রাণহীন। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলারচর, আলোরকোল, নারকেলবাড়িয়া, শেলারচর ও মেহেরআলীর চরে অস্থায়ীভাবে প্রায় ৪০ হাজার জেলে ও বহরদার বন বিভাগকে নির্ধারিত রাজস্ব দিয়ে অস্থায়ী শুঁটকি পল্লীতে ‘অস্থায়ী ঘর’ করে বাস করেন। এ সময় জেলেরা প্রায় ৩০ ধরনের জাল দিয়ে সামুদ্রিক সাদা মাছসহ চিংড়ি ও কাঁকড়া আহরণ করেন। কার্তিক থেকে চৈত্র পর্যন্ত দুবলারচরের এই কর্মব্যস্ততাকে জেলেদের ভাষায় বলা হয় মাছের 'গোন'। চরজুড়ে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষের বসবাস থাকলেও সেখানে নেই কোনো মহিলা। রান্নাবান্না থেকে শুরু করে ঘরের সব কাজ করেন পুরুষরা। এ চরের পুরুষরা ঘরের কাজে খুবই পারদর্শী। কার্তিকের এক সকালে চর ঘুরে এখানকার মানুষের জীবনের প্রভাব বিস্তার করা নানা কুসংস্কারের কথা জানা গেল। এই চরে কোনো মহিলাকে আনা হয় না বা থাকতে দেওয়া হয় না। চরের অস্থায়ী বাসিন্দারা বিশ্বাস করেন, মহিলারা সেখানে গেলে চরটি ঘিরে মাছ তোলার যে বিশাল আয়োজন, তাতে ভাটা পড়বে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct