সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে, ভাঙড়: দুর্ঘটনায় দুজনেই পা হারিয়েছেন ভাঙড়ের দম্পতি। পুত্রহীন ফজলে মিস্ত্রি- মমতাজ বিবির পাঁচ মেয়ে। সংসারের হাল ধরতে পাঁচ মেয়ে স্কুল ছেড়ে কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। অসহায় পরিবারের পাশে সহায়তার হাত বাড়ালেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সহকারী সভাপতি ওহেদালী শেখ।
দিন তিনেক আগে সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশ পাওয়ায় তার চোখে পড়তেই শনিবার কাকভোরে ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার ভাঙড় ১ নম্বর ব্লকের চন্দনেশ্বর ২ অঞ্চলের কালেরাইট গ্রামে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির হন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সহ সভাপতি ও ভাঙড় ১ এ ব্লক সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ওহেদালী শেখ। চাল, ডাল, আলু, পেয়াজ, সবজি, শুকনো খাবার ও শীতবস্ত্র পরিবারের হাতে তুলে দেন তিনি। পাশাপাশি নগদ সাত হাজার টাকা তুলে দেন পরিবারের হাতে।
ওহেদালী শেখ এদিন দম্পতির পাঁচ মেয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরার কথা বলে সমস্ত রকম সহায়তার ঘোষণা করেন। দম্পতির বড়ো এবং মেজো কন্যা কালেরাইট মাদ্রাসার যথাক্রমে দশম ও নবম শ্রেনীর ছাত্রী। তাঁরা ওহেদালী শেখের ঘোষণায় আশ্বস্ত হয়ে কৃষিকাজ সামলেও স্কুলে ফিরতে চেয়েছেন। দম্পতির ছোট কন্যার বয়স মাত্র চার বছর।
উল্লেখ্য ২০১৫ সালে সবজি বিক্রেতা ফজলে মিস্ত্রী ঘটকপুকুর-সোনারপুর রোডের সুন্দিয়া বাজারে সবজির গাড়ী চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে পড়েন। ইঞ্জিনভ্যান সরাসরি গিয়ে ধাক্কা খায় বিদ্যুতের খুঁটিতে। খোয়াতে হয় বাম পা। সংসারের হাল ধরে ছিলেন স্ত্রী মমতাজ বিবি।
স্বামী ও কন্যা সন্তানদের মুখে অন্ন তুলে দিতে কৃষি শ্রমিকের কাজ বেছে নিতে হয় মমতাজ বিবিকে। ভাগ্যের মহা পরিহাস! এবার দূর্ঘটনায় পা হারানোর উপক্রম সংসারের হাল টানা মমতাজের। সপ্তাহ দুয়েক আগে ঘটকপুকুর- সোনারপুর রোডেরই মিলন বাজারে দূর্ঘটনার শিকার হন। বর্তমানে তিনি কলকাতার সন্তোষপুরের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন স্বামীর মতো তাঁরও বাদ দিতে হবে বাম পা।
ফজলে মিস্ত্রী ওহেদালী শেখের এমন সহায়তা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। দম্পতির বড়ো কন্যা ফিরদৌসি খাতুন বলেন, “ ওহেদালী বাবুকে যেভাবে পাশে পেলাম, তাতে ভরসা পাচ্ছি। আমরা স্কুলে যেতে চাই।”
ওহেদালী শেখ বলেন, “ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অসহায় পরিবারটিকে সাহায্য করলাম। আরও সহযোগিতার জন্য সাংসদ মিমি চক্রবর্তী ও বিধায়ক সওকাত মোল্লার সঙ্গে কথা বলেছি। সর্বদা আমি পরিবারটির পাশে থাকার চেষ্টা করব।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct