সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে, বারুইপুর: কিছু দিন আগেই উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হাবরা রেল স্টেশনে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন এক যুবতী। ‘ইংলিশে এম এ চাওয়ালি’ নাম দিয়ে খুলে ছিলেন চায়ের দোকান। এবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বারুইপুরে দেখা গেল ‘বি কম অনার্স গ্যারেজ ওয়ালা’ নামের গ্যারেজ।
বারুইপুর নিউ ইন্ডিয়ান মাঠে বৃহস্পতিবার দেখা গেল অন্য এক ছবি। এক টুকরো ছবি যেন বলে দিচ্ছিল অনেক না পাওয়া গল্পের কথা। ছবিটি চোখে পড়তেই আপনজন প্রতিনিধি এগিয়ে গিয়ে কথা বলেন বি কম অনার্স গ্যারেজ ওয়ালা কল্যানাশীষ নন্দীর সঙ্গে। তাঁর কথায় ফুটে ওঠে চাকরি না পাওয়ার আক্ষেপ, আর জীবন যন্ত্রণার কথা। বি কম অনার্স করেও চাকরি না জোটায় তিনি বিয়েও করেননি।
৪৭ বছরের বি কম অনার্স গ্যারেজ ওয়ালা কল্যানাশীষ বাবু থাকেন বারুইপুরের ভট্টাচার্য পাড়ায়। বারুইপুর হাই স্কুল থেকে তিনি ১৯৯১ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। একই স্কুল থেকে ১৯৯৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন কলকাতার চিত্তরঞ্জন কলেজে। সেখান থেকে ১৯৯৬ সালে বি কম অনার্স নিয়ে পাশ করে চাকরির জন্য চেষ্টা করে ও চাকরি হয়নি। চাকরি না পাওয়ায় তিনি বিবাহ বন্ধনেও আবদ্ধ হননি।
বর্তমানে তিনি পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদের টিউশানি পড়ান। বাণিজ্য বিভাগের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীদেরও পড়াতেন। এখন আর বি কম পড়ুয়া পাওয়া যায় না। তাই একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ানো ছেড়ে দিতে হয়েছে।
টিউশানির সামান্য টাকায় সংসারের চাকা ঠিক চলছিল না। তাই তিনি এখন গ্যারেজ খুলেছেন। বারুইপুর মিলন মেলার মতো বিভিন্ন মেলায় বা অনুষ্ঠানে তিনি গ্যারেজ লাগান।
বি কম অনার্স গ্যারেজ ওয়ালা নাম কেন? বা বিয়ে করেননি কেন? আপনজন প্রতিনিধির এই প্রশ্নের উত্তরে আক্ষেপের করুণ সুর শোনা যায় কল্যানাশীষ বাবুর গলায়। তিনি বলেন, “ আমার আক্ষেপের কথা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি ‘বি কম অনার্স গ্যারেজ ওয়ালা’ লেখার মাধ্যমে। আর চাকরি পাইনি বিয়ে করে সংসার চালাবো কিভাবে?!”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct