আপনজন ডেস্ক: বাংলার একদল বুদ্ধিজীবী ও বিদগ্ধ মানুষ পশ্চিমবঙ্গের বহুসাংস্কৃতিক দর্শন অধ্যয়ন ও প্রচারের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন এক সামাজিক প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অফ মাল্টিকালচার স্টাডিজ বা ‘বিমস’। তারই উদ্যোগে আজ সন্ধ্যা ৬টায় পশ্চিমবঙ্গ উর্দু একাডেমির মাওলানা আজাদসভাঘরে ‘ইসলাম, আন্তঃধর্ম সংলাপ ও বহুসাংস্কৃতিক: ড. আতাউল্লাহ সিদ্দিকীর ভূমিকা’ শীর্ষক প্রথম একাডেমিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধান বক্তা জিসেবে থাকছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাফাত আলি। পৌারহিত্ত্য করবেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল মতিন।
এ ব্যাপারে বিমস-এর সাধারণ সম্পাদক ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অফ মাল্টিকালচার স্টাডিজ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, দেশে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল সংবিধান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থাকা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শিক্ষাখাতে চরমপন্থী আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কারণে ভারতীয় সমাজ ভেঙে পড়ার অবস্থায় রয়েছে। ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত। এর ফলে আমাদের ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত জীবনে অবিশ্বাস, ঘৃণা, বৈষম্য এবং উদাসীনতার এক বিশাল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাই আমাদের সমাজে ভ্রাতৃত্ব, বৈজ্ঞানিক মেজাজ এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ধারণাকে উন্নীত করা আমাদের সাংবিধানিক ও নাগরিক কর্তব্য।
‘বিমস’ একটি বিকল্প শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক মঞ্চ যার মূল উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক বিষয়গুলির বিভিন্ন দিক এবং বিশেষত অনগ্রসর ও প্রান্তিক সমাজের উপর গবেষণা এবং প্রতিবেদন। ‘বিমস’ গবেষণা এবং একাডেমিক ক্রিয়াকলাপ পরিচালনার জন্য বেশ কয়েকটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুশীল সমাজের সংস্থাগুলির সাথে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। এছাড়া ‘বেঙ্গল ইনস্টিটিউট অফ মাল্টিকালচার স্টাডিজ’-এ বক্তৃতা, সেমিনার, কর্মশালা, সিম্পোজিয়াম সংগঠিত করা হবে।
ড. রবিউল-ইসলাম আরও বলেন, এ কারণেই আমরা আমাদের প্রথম বক্তৃতার জন্য ইসলাম, আন্তঃধর্ম ও আন্তঃসাংস্কৃতিক বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বেছে নিয়েছি। ড. আতাউল্লাহ সিদ্দিকি পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পংয়ের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি কালিম্পংয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার পর ব্রিটেনে চলে যান। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি এবং গ্লুচেস্টারশায়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট লাভ করেন। তিনি যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম, খ্রিস্টধর্ম এবং আন্তঃধর্ম সম্পর্কের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ২০০৭ সালে ব্রিটিশ সরকার ‘ইসলাম: ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভবিষ্যতের চাহিদাপূরণে বৈঠক ও বিনিয়োগ’ শিরোনামে একটি কমিশন গঠন করে যা ড. আতাউল্লাহ সিদ্দিকী তৈরি করেন। তিনি আন্তঃধর্ম বিষয়ে বেশ কয়েকটি বই এবং স্মরণীয় উপদেশমালাও প্রকাশ করেছেন।
ড. রবিউল ইসলাম বলেন, ড. আতাউল্লাহ সিদ্দিকীর সেবার আলোকে আমরা ভারতে আন্তঃধর্ম ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করার উপায় খুঁজে বের করব এবং আশা করি দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কর্মসূচি একটি আলো হয়ে উঠবে।
তাই কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে এবং এই বার্তা জনসমক্ষে আনতে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: