সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে, ভাঙড়: ফুরফুরার পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর ধর্মসভা ঘিরে ধুন্ধুমার কান্ড ভাঙড়ে। আব্বাস অনুগামী ও পুলিশের মধ্যে খন্ডযুদ্ধ বাসন্তী হাইওয়ের উপর ভোজেরহাটে। অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ আব্বাস সিদ্দিকী ও পুলিশের।
জানা গেছে রবিবার ভাঙড় ১ নম্বর ব্লকের নারায়ণপুর অঞ্চলের পদ্মপুকুর গ্রামে ধর্মীয় সভা করার কথা ছিল পীরজাদা তথা আইএসএফ দলের প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকীর। অভিযোগ সেই সভায় যোগ দিতে যাওয়ার সময় বাসন্তী হাইওয়ের ভোজেরহাটে আব্বাসকে আটকায় পুলিশ। পাশাপাশি ধর্মসভার উদ্দেশে আসা অনুগামীদেরও বিভিন্ন জায়গায় আটকায় পুলিশ। জায়গায় জায়গায় গাড়ী আটকানোর অভিযোগ উঠেছে ভাঙড়, কেএলসি ও কাশিপুর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে।
পদ্মপুকুরে সভাস্থলে যেতে না পেরে আব্বাস সিদ্দিকী বাসন্তী হাইওয়ের উপর ভোজেরহাট ও পাগলাহাটের মাঝখানে গাড়ীর উপর থেকে বক্তব্য রাখেন। অনুগামীদের ভিড়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়ক বাসন্তী হাইওয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। অবরোধ তুলতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও ক্যাদানে গ্যাস ব্যবহার করে। পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জে বেশ কয়েকজন আব্বাস অনুগামী আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। আব্বাস অনুগামীদের গাড়ীতেও ভাঙচুরের অভিযোগে উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য শনিবার রাতেও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়ের প্রাণগঞ্জ অঞ্চল। আইএসএফ কর্মীদের গাড়ীতে ও বাড়ীতে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত হন কয়েকজন আইএসএফ কর্মী। তাদের নলমুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় একজন মহিলা কর্মীকে কোলকাতায় স্থানান্তর করা হয়। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে দু'জনকে গ্রেফতারও করে ভাঙড় থানার পুলিশ।
আব্বাস সিদ্দিকী ঘটনা সম্পর্কে বলেন, " মানুষ দু'হাত ভরে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিল। আমরাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়ে ছিলাম। ধর্মসভায় পুলিশের বাধায় আমি মর্মাহত। এই রাজ্যে ধর্মসভা করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক তথা আব্বাস সিদ্দিকীর ভাই নওসাদ সিদ্দিকী ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, "মানুষের ধৈর্যের একটা সীমা থাকে। শাসক দলের অঙ্গুলি হেলনে পুলিশ যা করছে তা দূর্ভাগ্যজনক। মানুষ যেন পুলিশের বিরুদ্ধে আস্থা না হারায়। তা পুলিশকে নিশ্চিত করতে হবে।"
পুলিশের পাল্টা অভিযোগ আব্বাস অনুগামীদের বিরুদ্ধে। বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেড কোয়াটার্স মাকসুদ হাসান বলেন, " আব্বাস অনুগামীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রায় পাঁচশ ইট ছুড়েছে। ইটের ঘায়ে কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। বাধ্য হয়ে আমরা ওদের হঠিয়ে দেই। আটক করা হয়েছে ছয়জনকে।"
এদিনের সভায় পুলিশের অনুমতিও ছিল না বলে পুলিশ দাবি করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct