নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর: ফল বিক্রি করে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেল সাবির। একেই বলে ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো। বাবা একজন ফল বিক্রেতা,ছেলে পেল ডাক্তারি পড়ার সুযোগ। সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটে ৯৫২৬ র্যাঙ্ক করে এমবিবিএস পড়ার সুযোগ পেল মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা সেখ সলেমানের একমাত্র ছেলে সাবির আলি। ফল বিক্রি করে অভাবের সংসার চালান বাবা সেখ সলেমান। আর্থিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে সাবিরের সাফল্যে গর্বিত পরিবার সহ গোটা গ্রাম। সংসারে রয়েছে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে।অভাবের সংসারে কঠোর পরিশ্রম করেও ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছেন তিনি। সোমবার সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের ফলাফল প্রকাশিত হতেই আনন্দের জোয়ার সাবিরের ঘরে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬২৬। ছেলের সাফল্যে আপ্লুত বাবা সলেমান।
আনন্দে ও গর্বে বাধ মানেনি চোখের জলও। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য গ্রামের মানুষের দুরবস্থা দেখে স্থির করেছিলাম ছেলেকে ডাক্তারি পড়িয়ে চিকিৎসক তৈরি করব।ফল বিক্রি করে চরম আর্থিক সমস্যার মধ্যেও ওর পড়াশোনা করিয়েছি। আমার ছেলেরও আগ্রহ ছিল ডাক্তারি পড়ার। ছোট থেকেই পড়াশোনায় সে অত্যন্ত মেধাবী। পড়াশোনার পাশাপাশি আমার ফলের দোকানও সামলাত।
নিজের সাফল্যে খুশি সাবিরও।তিনি বলেন, ২০১৭ সালে হাওড়ার খলতপুর শাখা আল অামীন মিশন থেকে ৮৬.৮৫ শতাংশ নাম্বার পেয়ে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছি এবং ২০১৯ সালে সূর্যপুর শাখা আল আমীন মিশন থেকে ৮৮.৮ শতাংশ নাম্বার পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছি। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে মেডিক্যালের জন্য কোচিং নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করি।
প্রথম বার অসফল হওয়ার পর বাড়িতে বসেই প্রস্তুতি শুরু করি।এবার সফলতা এসেছে। প্রতিদিন নিয়ম করে ৮/৯ ঘন্টা করে পড়তাম।সময় পেলেই বাবার সঙ্গে ফলের দোকানে বসতাম।বাবা-মা ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় এই সাফল্য।চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করাই আমার লক্ষ্য।’
প্রতিবেশী আনোয়ার কবির বলেন,’সেখ সলেমানের ছেলে সাবির ছোট থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মেধাবী।সলেমানও খুব পরিশ্রম করে ছেলেকে বড় করিয়েছে। আজ ছেলে ওকে সাফল্য এনে দিয়েছে। আমাদের গ্রামের ছেলে ডাক্তারি পড়ে চিকিৎসক হয়ে আসবে। আমরা গর্বিত।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct