আপনজন ডেস্ক: ৩ বছরের শিশুকে আপনি জিজ্ঞেস করছেন, তুমি কি দুধ খেয়েছো?, শিশুটি দুধ না খেয়েও বলছে, হ্যাঁ দুধ খেয়েছি। এখানে শিশুটি আপনাকে ধোকা দেওয়ার জন্য ভুল তথ্য দেয়নি। সে আপনাকে খুশি করার জন্য বা শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ভুল তথ্য দিয়েছে। এ তথ্যকে আমরা মিথ্যা বলতে পারি না। সাধারণত শিশুদের আট বছর বয়সের আগে মিথ্যা বলার মতো মানসিক বিকাশ হয় না। এখন প্রশ্ন শিশুরা কেন মিথ্যা বলে? আসলে শিশু আগের কোন অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছে সত্য স্বীকার করলে শাস্তি পেতে হবে বা তার সঙ্গে কেউ রাগ দেখাবে। শিশু আগের অভিজ্ঞতা থেকে আরও শিখেছে দোষ স্বীকার না করাই ভালো। শিশু দোষ স্বীকার করলে আমরা যদি তাকে শাস্তি দেই তাহলে পরবর্তীতে শিশু শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য ভয়ে বারবার মিথ্যা বলবে। যখন শিশুরা কোন ভুল করে তা নিয়ে শিশু লজ্জায় পড়ে, অস্বস্তিবোধ করে। এছাড়া শিশুকে যদি আগে কখনও তার কাজের জন্য লজ্জা দেওয়া হয়ে থাকে তাহলেও শিশুরা মিথ্যা বলে। তাই লজ্জা ও অস্বস্তিবোধ থেকে বাঁচতে শিশুরা মিথ্যা বলে। ৮ বছর বয়সের আগে শিশুরা বাস্তবতা ও কল্পনাকে আলাদা করতে পারে না। তাই আট বছর বয়সের আগে শিশু কোন ভিন্ন তথ্য দিলে আমাদের ধরে নিতে হবে এটাই তার বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিক। অনেক সময় শিশুরা অন্যদের দেখে মিথ্যা বলা শেখে। যেমন, পরিবারের বড় কোন সদস্য (মা, বাবা, ভাই, বোন) শিশুর সামনে মিথ্যা বললো। শিশু জানতে চাইলো কেন পরিবারের ওই সদস্য মিথ্যা বলেছেন। তখন ওই সদস্য জানালো মাঝে মাঝে প্রয়োজনে মিথ্যা বলা যায়। শিশু যখন দেখবে প্রয়োজনে মিথ্যা বলা যায় বা অন্যরা মিথ্যা বলে কোন সুবিধা পাচ্ছে বা কোন সমস্যা এড়িয়ে যেতে পারছে, তখন সেও মিথ্যা বলতে উৎসাহিত হবে। শিশুকে সত্য কথা বলতে উৎসাহিত করতে হলে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো শিশুকে সেই সব গল্প শোনানো যেখানে সত্য কথা বলার সুবিধা বা পুরস্কার সম্পর্কে বলা হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মীয় গল্প বা ঈশপের গল্প। চাইলে আপনি নিজেও বয়স অনুযায়ী ছোট বড় গল্প তৈরি করে শুনাতে পারেন। শিশু সত্য বললে তার সততার জন্য প্রশংসা করুন। শিশুর কাছে আপনি নিজে যে ধরনের আচরণ আশা করছেন, আপনি নিজেও একই ধরনের আচরণ করুন। শিশুর কাছে সত্য কথা আশা করলে নিজেও তার সামনে সব সময় সত্য বলুন। কথা দিয়ে কথা রাখুন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct