ফৈয়াজ আহমেদ: চোখজুড়ানো সৌন্দর্যের এক জগত হল পর্যটন রাজ্য সিকিম। সিকিম ভারতের অন্যতম ক্ষুদ্র রাজ্য। স্বপ্নের দেশের মতো সুন্দর এই রাজ্য পর্যটকদের দারুণ প্রিয় একটি গন্তব্য।
দক্ষিণ সিকিমের রাভাংলা এর নাম শোনেনি এমন মানুষ আজকের দিনে পাওয়া বিরল। এখন আর রাবাংলাকে কোনমতেই সিকিমের অফবিট লোকেশন বলা যায় না। রাভাংলা থেকেই মাত্র ৭ কিমি দুরে অবস্থিত কেউজিং এর পরিচয় করিয়ে দেবো হিমালয়ান ট্র্যাভেলরদের সাথে । অন্য আর পীচটা ছোট, নিরিবিলি, অপরিচিত পাহাড়ী জনপদের মতোই কেউজিং। তবে কেউজিংকে মনে রাখতে হবে একটি হোমষ্টের কারণে, হোমস্টের বিশেষত্বের কারণে।
রাভাংলা প্রায় ৭০০০ ফিট উচ্চতায় মৈনাম পর্বতের পাদদেশে এক সুদৃশ্য ছোট্ট শহর। অনেকেই গ্যাংটক থেকে পেলিং যাওয়ার পথে রাবাংলা ১-২ দিনের জন্য টু মেরে যান। তবে এখন শুধু রাভাংলা ঘুরতে যাওয়ার ট্যুরিষ্টের সংখ্যাও কম নয়। সারাবছরই প্রচুর মানুষ রাবাংলা ঘুরতে যান । তার সাথে সঙ্গতি রেখেই ছোট-বড় হোমস্টে, হোটেল প্রচুর এই পাহাড়ী শহরে ।
যারা রাভাংলা ঘুরতে যান তারা চাইলে একবার ঘুরে আসতে পারেন কেউজিং থেকে । রাভাংলার শহুরে ব্যাস্ততা থেকে অনতিদূরে কেউজিং সুন্দর ছোট্ট একটি গ্রাম। আর গ্রামটির সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায় যখন আপনি সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাতে কচলাতে বরফ মোড়া মাউন্ট নরসিংকে দেখতে পান, আপনার ঘরের জানলা দিয়ে বা এক দঙ্গল মেঘ এসে হঠাৎ ঢুকে পড়ে আপনার ঘরের ভেতর ।
কেউজিং থেকে কাছেপিঠে দর্শনীয় স্থান অনেক। রাবাংলাতে তথাগত স্তল আজ গোটা সিকিমের এক অন্যতম আকর্ষণ । কোন পাহাড়ী দুপুরের নিঃস্তদ্ধতায় বিরাট বৃদ্ধ মূর্তি আর সুসজ্জিত পার্কের ভেতরে হাটতে হাটতে আপনি হারিয়ে যাবেন মনের গহনে। এই ভালো লাগা লেখায় ব্যাক্ষা করা যায় না। এছাড়া টেমি টি গার্ডেন, সম্পদ্রুল্সে মনান্ত্রি, নামচি চারধাম, রালোং মনাস্ত্রি, বন মনাস্ত্রি সবই গাড়ী ভাড়া করে দিনে দিনে ঘুরে আসা যায়। মৈনাম ট্রেক ও এক দারুণ অভিজ্ঞতা, তাই আপনি যদি ট্রেক করতে ভালোবাসেন অবশ্যই এই ট্রেকটি করুন । আর পারলে বোরং ও ঘুরে আসুন । ছোট্ট একটি অস্তুত সুন্দর গ্রাম ।
যাওয়ার উপায়
কোলকাতা থেকে নিউ জলপাউগুড়ি গামি যে কোন ট্রেনে এনজেপি।
নিউ কেউজিং গ্রামটি সাউথ সিকিম এর অন্তর্গত। এনজেপি স্টেশন থেকে এখানে যেতে চার ঘন্টার মতো সময় লাগবে, আনুমানিক দূরত্ব ১৩০ কিমি । গাড়ি ভাড়া আনুমানিক চার হাজার টাকার মতো নেবে । রাভাংলা থেকে আট কিলোমিটার দুরত্বে এই গ্রাম ।
থাকবার জায়গা
কেউজিং এ থাকবার সেরা চয়েজ হলো শেরপাজির হোমস্টে। পুরোপুরি অর্গানিক এই হোমক্টের বিশেষত্ব হলো এই হোমক্টের খাবার এবং আতিথিয়তা । পুরোপুরি প্লাষ্টিক বর্জিত এই হোমস্টটি। এই হোমস্টে জানলা দিয়ে মাউন্ট নরসিং কে যেন ছোয়া যায়, সঙ্গে নিত্য মেঘেদের সারি আপনার জানলায় এসে জানান দেয় তাদের উপস্থিতি । সবমিলিয়ে এক অনন্য অনুভূতি । রাভাংলার মতো শহরে কোলাহল থেকে একটু দূরে, কেউজিং এর পথের ধারে হোমস্টে টি অসাধারণ । দুদিন কাটিয়ে না গেলে বোঝা যাবেনা কেন হোমস্টেটি সবার চেয়ে আলাদা। এই হোমস্ট্ের ছবির মতো সাজানো ঘর, ফুলের গাছ আপনাকে মুগ্ধ করবেই, সঙ্গে থাকবে শেরপাজির আতিথিয়তা ৷ এছাড়া এক্সক্লুসিভ সিকিমিস খাবারের স্বাদ, নানারকম লোকাল খাবার এর স্বাদ নিতে চাইলে কেউজিং এর এই হোমস্টে তে আসতেই হবে ।
হোমস্টে জন প্রতি প্রতিদিন ১৫০০/- টাকা (সব মিল) (এক্সক্লুসিভ সিকিমিস ফুড)
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct