অমরজিৎ সিংহ রায়, বালুরঘাট: পশ্চিমবঙ্গ সহ তিন রাজ্যে বিএসএফের ক্ষমতা আরও বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি নিয়ে এবার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হল মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি। মঙ্গলবার বালুরঘাট টাউন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির তরফে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে আয়োজিত এদিনের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী সহ অন্যান্য রা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়।বাংলাদেশ, পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে এমন তিন রাজ্যে ক্ষমতা বাড়ানো হয় বিএসএফ-এর। এতোদিন আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এই ৩ রাজ্যের ভারতীয় ভূখণ্ডের ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত তল্লাশি, বাজেয়াপ্ত, গ্রেফতারকরার কাজ করতে পারত সীমান্ত রক্ষী বাহিনী।এবার সেই পরিধি বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত করা হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের মানা হচ্ছে না, এই দাবিতে এদিন প্রতিবাদে সরব হয় বালুরঘাট শহর মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি।
এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি প্রদীপ্তা চক্রবর্তী জানান, আপনারা জানেন আইনত বিএসএফ এর ক্ষমতা রাস-বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে একটি নির্দেশিকা রয়েছে। সেটা কেন্দ্রীয় সরকার নোটিফিকেশন করে করতে পারে। তবে সেটা অবশ্যই রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা করে।
কিন্তু এক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারের আবার একটা বৈষম্যমূলক আচরণ আমরা লক্ষ্য করছি। গুজরাটের মত রাজ্যের যেখানে ৮০ কিলোমিটার ছিল সেটা কমিয়ে ৫০ কিলোমিটার করে দেয়া হয়েছে। অথচ আমাদের পশ্চিমবঙ্গে যেটা ১৫ কিলোমিটার ছিল সেটা বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করে দেয়া হয়েছে। আমাদের মত প্রান্তিক জেলা যেগুলো রয়েছে বর্ডার সংলগ্ন; সেখানে বালুরঘাটের মতো ছোট্ট একটি শহর পুরোটাই ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে ।
অর্থাৎ , এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো কোথায়ও ক্ষতি করার চেষ্টা হচ্ছে। কারণ ল অ্যান্ড অর্ডার সম্পূর্ণ রাজ্যের বিষয়। এটা কেন্দ্রের বিষয়ের মধ্যে আসেনা।ফলে এই দুটোর মধ্যে কোথাও সংঘাতের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র পরিকাঠামোয়।এর জন্য আজ আমাদের এই অবস্থান বিক্ষোভ ও প্রতীকী প্রতিবাদ। এই বিষয়টি কখনোই কাম্য নয়। কারন মা মাটি মানুষ এর সরকারের আমলে পশ্চিমবঙ্গে আমরা সুশাসনে বসবাস করি। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার কোথায়ও তাদের এজেন্সি দিয়ে একাধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করবে সেটা মেনে নেয়া যায়না।যখন দেখা যাচ্ছে তারা বিধানসভা নির্বাচনে হেরে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দখল করতে পারল না, তখন একটা নিচু মানসিকতা দেখিয়ে কিভাবে পশ্চিমবঙ্গ কে দখল করা যায় তার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারই প্রতিবাদে আমাদের অবস্থান বিক্ষোভ।
এবিষয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি ডক্টর সুকান্ত মজুমদার জানান,বিএসএফ ও পুলিশকে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করতে হবে।আমার মনে হয় বিএসএফের সাথে রাজ্য সরকারের পুলিশ যদি সামঞ্জস্য রেখে কাজ করে তাহলে কোন অসুবিধা হবে না।কিন্তু রাজনৈতিক লক্ষ্য সিদ্ধির জন্য যদি কেউ কাজ করে, যেটা দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পুলিশের ক্ষেত্রে- পুলিশের পলিটিক্যালাইজেশন হয়ে যাওয়ার ফলে তারা সেভাবে কাজ করে তার ফলে বিরোধ হলেও হতে পারে । কিন্তু সাংবিধানিক অধিকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রয়েছে। সে অধিকার বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারো পছন্দ না হলে তাঁরা কোর্টে যেতে পারেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct