ফৈয়াজ আহমেদ: মাইক্রোসফটের কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের সর্বশেষ সংস্করণ উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের জন্য বিনামূল্যে আপগ্রেড চালু করা হয়েছে।
(APONZONE TV আপনজন টিভি দেখতে এখানে ক্লিক করুন)
উইন্ডোজের চিফ প্রোডাক্ট অফিসার পানোস পানায় বলেন, সর্বশেষ সংস্করণটি ব্যবহারকারীর জন্য “সহজ, তাজা এবং পরিছন্ন “ ভাবে তৈরি করা হয়েছে।
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, নতুন অপারেটিং সিস্টেমটি মানুষের জন্য বিশেষ কঠিন হবে না। সাধারণ প্রযুক্তি জ্ঞান থাকলেই ব্যবহারকারীরা সহজেই আপগ্রেড করতে পারবেন।
পরিবর্তন ও নতুনত্ব এলো যেসব ফিচারে :
উইন্ডোজের নকশায় সুনির্দিষ্ট পরিবর্তন আনা হয়েছে। টাস্কবারের একেবারে কেন্দ্রে ডিফল্ট আকারে থাকবে স্টার্ট মেন্যু। পাশাপাশি থাকবে অন্যান্য আইকন। স্টার্ট বাটনে ক্লিক করলে, এটি বারবার ব্যবহৃত অ্যাপসগুলো সম্বলিত একটি মেন্যু সামনে নিয়ে আসবে। এটা কিছুটা স্মার্টফোনের অ্যাপ মেন্যু কিংবা লঞ্চারের মত কাজ করবে।
উইন্ডোজ ১০-এর স্টার্ট মেন্যুতে যে ‘টাইলস’ রয়েছে, নতুন অপারেটিং সিস্টেম থেকে সেটি বাদ দিয়েছে মাইক্রোসফট।
উইন্ডোজ ১১ তৈরির ক্ষেত্রে মানুষ কীভাবে কম্পিউটার ব্যবহার করে সেই বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
উইন্ডোজ ১১-এর ক্ষেত্রে স্টার্ট বাটন রয়েছে। এটা স্ক্রিনের একেবারে মাঝখানে রয়েছে। এটাকে বাদ দেয়া হয়নি।
উইন্ডোজ- ১১ এর পুরো সিস্টেমজুড়ে গোলাকার সুন্দর সমৃদ্ধ নকশা করা হয়েছে। এটির মেন্যু এবং ফোল্ডার দেখার ব্যবস্থা সহজ করা হয়েছে।
উইন্ডোগুলোকে সাজানো এবং গ্রিডে ভাগ করার অপশনটি নতুন ও আরো উন্নত করা হয়েছে।
২০০৭ সালের উইন্ডোজ ভিস্তার গুরুত্বপূর্ণ একটি ফিচার উইজেট ফিরিয়ে আনা হয়েছে আবার। তবে তখন উইজেটকে স্ক্রিনে যেকোনো জায়গায় ইচ্ছেমত রাখা যেত, কিন্তু এখন উইজেটগুলি বামপাশের একটি সাইডবারে থাকবে। যা যুক্ত থাকবে মাইক্রোসফট সার্ভিসের সাথে।
ইন্টারফেস ও নকশায় পরিবর্তন ছাড়া আরো কিছু পরিবর্তনও আনা হয়েছে উইন্ডোজ ১১-তে। স্কাইপের স্থান নেয়া মাইক্রোসফট টিমস এবং এক্সবক্স অ্যাপে যে সিস্টেম ইন্টেগ্রেশন করা হয়েছে সেগুলোর ব্যাপক প্রচারণা রয়েছে মাইক্রোসফটের বিজ্ঞাপনে।
অ্যাপ স্টোরের উইন্ডোজ ভার্সন, মাইক্রোসফট স্টোরকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। এখন থেকে স্টোরে তৃতীয় পক্ষকে তাদের অ্যাপ্লিকেশন বিক্রির সুযোগ দেওয়া হবে।
তবে নতুন যে ফিচারটি প্রযুক্তি বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে তা হল উইন্ডোজ ১১-তে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের জন্য তৈরি অ্যাপসগুলো চলবে অ্যামাজন অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে।
প্রথম ব্যবহারকারীরা বলছে, নতুন ভার্সনের অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান ব্যবস্থাটি আগের চাইতে দ্রুততর। তবে এটি ওয়েব অনুসন্ধানের ফলাফল প্রদর্শনের ক্ষেত্রে মাইক্রোসফটের নিজস্ব সেবা বিং এবং এজ ব্রাউজারকে অগ্রাধিকার দেয়।
গেমারদের জন্য মাইক্রোসফট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এটির নতুন ড্রাইভ প্রযুক্তি ডিরেক্ট স্টোরেজ গেম লোডের সময়ের ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা দেবে। তবে সব কম্পিউটার নতুন এই সুবিধার সুযোগ নিতে পারবে না, নতুন হার্ডওয়্যার সংযুক্তির প্রয়োজন হবে।
এই সুবিধা নিতে কম্পিউটারে এক ধরনের সিকিউরিটি চিপ থাকতে হবে যেটাকে বলা হয় টিপিএম। শুধুমাত্র আধুনিক কম্পিউটারগুলোতে এই চিপ যুক্ত করা হয়।
মাইক্রোসফট নতুন কিছু হার্ডওয়্যারও উন্মুক্ত করেছে সম্প্রতি, যেগুলো উইন্ডোজের নতুন এই ভার্সনটির সাথে সম্পর্কিত।
কিন্তু যেসব ব্যবহারকারী উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করছেন তাদের কম্পিউটার সচল থাকলে নতুন এই হার্ডওয়্যারগুলোর জন্য বাড়তি খরচ করতে হবে না।
উইন্ডোজ ১০ই অক্টোবর ২০২৫ সাল পর্যন্ত নিরাপত্তা আপডেট ও সাপোর্ট পেতে থাকবে।