নাজিম আক্তার, চাঁচল: প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত শয্যাশায়ী হতদরিদ্র এক ব্যাক্তির পরিবারের কাছ থেকেও কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠলো হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শাসকদলের অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ কুমার দাসের বিরুদ্ধে।এমনকি স্থানীয় একটি মিনি ব্যাংকের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই কাটমানি তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ।ওই মিনি ব্যাংক চালান মিঠু রাম দাস নামে ওই এলাকার এক সিভিক ভলেন্টিয়ার।
সিভিক ভলেন্টিয়ার এবং শাসক দলের অঞ্চল সভাপতির নেতৃত্বে এ সমস্ত কর্মকাণ্ড চলছে বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিলডাঙি গ্রামের বাসিন্দা রুমা থকদার ওই অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ কুমার দাসের বিরুদ্ধে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।এই নিয়ে চাঞ্চল্য মালদার রাজনৈতিক মহলে।তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমা শাসক কল্লোল রায় ও বিডিও অনির্বাণ বসু।তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বের কাছে কৈফিয়ত তলব জেলা নেতৃত্বের। জানা গেছে ওই গ্রামের বাসিন্দা রামহরি দাস প্রায় চার বছর ধরে প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী।হাত পা নড়াচড়া করার ক্ষমতা হারিয়েছে সে।এক সময় দিন মজুরের কাজ করতেন সে এখন সম্পুর্ন কর্মহীন।স্ত্রী রুমা অন্যের বাড়িতে কাজ করে সামান্য কিছু যা উপার্জন করেন তা দিয়েই একমাত্র কন্যা সন্তানকে নিয়ে অনাহার অর্ধাহারে দিন কাটান। ভাঙাচোরা ঘর। সম্প্রতি আবাস যোজনায় নাম ওঠে কিস্তিতে টাকা পেতে শুরুও করেন। আর এখানেই অভিযোগ অঞ্চল সভাপতি স্বামী কুমার পঙ্কজ দাস তাঁর দুই কিস্তির টাকায় কাটমানি বাবদ ভাগ বসিয়ে ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।নিজেদের চরম দারিদ্র্যতা আর অসহায় অবস্থার জন্যে প্রথমে প্রতিবাদ করার সাহস দেখাতে পারেনি ওই পরিবার। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় তৃতীয় কিস্তির টাকা না পাওয়ায়। অভিযোগ কুমার পঙ্কজ দাস আবার ৫ হাজার টাকা দাবি করে তৃতীয় কিস্তির টাকা পাইয়ে দেওয়ার নামে। সেই টাকা দিতে পারেনি রামহরি দাসের পরিবার। আর সেই কারণেই নাকি তাঁদের তৃতীয় কিস্তির টাকা আটকে রেখেছেন পঙ্কজ দাস।
এরপরই বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রাম হরি দাসের স্ত্রী রুমা থকদার। অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসেছেন প্রশাসন। তদন্ত শুরু হয়েছে। অস্বস্তিতে তৃণমূল।
অন্যদিকে আরো অভিযোগ তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ কুমার দাস এলাকার একটি মিনি ব্যাংক মালিকের সঙ্গে যোগসাজশ করে ব্যাংকে টাকা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে টাকার কাটমানি হিসেবে তুলে নিচ্ছেন। ওই মিনি ব্যাংকের মালিক আবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এক সিভিক ভলেন্টিয়ার মিঠু রাম দাস। এই সিভিক ভলেন্টিয়ারের নেতৃত্বে অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ কুমার দাস এলাকায় কাটমানি আদায় করে থাকেন বলে খবর। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে ভয় পান এলাকার বাসিন্দারা। কারণ তিনি এলাকায় বাসিন্দাদের হুমকি দিয়ে রাখেন অভিযোগ করলেই দেখে নেওয়া হবে। যদিও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি ওই মিনি ব্যাংকের মালিক তথা সিভিক ভলেন্টিয়ার মিঠু রামদাস।
অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ কুমার দাস তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ব্লক থেকে তৃতীয় কিস্তির টাকা ছাড়লেই উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যাবে বলে জানান।
বিডিও অনির্বাণ বসু জানান অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহকুমা শাসক কল্লোল রায় জানান এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ জমা পড়লেই তদন্ত শুরু হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct