আপনজন ডেস্ক: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কি সত্যিই পৃথিবী একদিন মানুষের বাসযোগ্য আর থাকবে না। সেই প্রশ্ন তুলে দিল সম্প্রতি প্রকাশিত রাষ্ট্রসংঘের একটি রিপোর্ট। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সভ্যতার কাছে ২৫০০ সালের মধ্যে বাসযোগ্য এই পৃথিবী হয়ে পড়বে একটি ভিনগ্রহ। খুব দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবী আর বাসযোগ্য থাকবে না। রাষ্ট্রসংঘের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটা দাবি করেছেন। ‘ন্যাশনালিটি িডটারমাইন্ডেড কন্ট্রিবিউশনস আন্ডার দ্য প্যারিস এগ্রিমেন্ট’ শিরোনামের গবেষণাটি ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘গ্লোবাল চেঞ্জ বায়োলজি’-তে।
এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিভিন্ন রাষ্ট্র গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ কমানোর যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলি পুরোপুরি রক্ষিত হলেও আর ৭৯ বছরের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রাক শিল্পযুগের চেয়ে অন্তত ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তার ফলে এমন ঘনঘন ও ভয়ঙ্কর দাবানল হবে বিশ্বজুড়ে, যা অভূতপূর্ব। একইভাবে ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, খরা, বন্যা, তাপপ্রবাহ ও শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা ও সংখ্যা এতটাই অকল্পনীয়ভাবে বেড়ে যাবে যে ২১০০ সালে পৃথিবী আর বাসযোগ্য থাকবে না। মানবসভ্যতার কাছে হয়ে পড়বে আরও একটি ভিন্গ্রহ। শুধু তা-ই নয়, স্থল ও জলের যাবতীয় বাস্তুতন্ত্রেরও আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা-বৃদ্ধিকে প্রাক শিল্পযুগের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বেঁধে রাখতেই হবে।
না হলে শেষের সে দিন ঘনিয়ে আসবে পার্থিব সভ্যতার। গবেষকরা দেখেছেন, ২১০০ সালের পরেও পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হবে না। তার ফলে, বিশ্বজুড়ে প্রচুর কৃষিজমি পুরোপুরি অ-ফসলি, অনুর্বর হয়ে পড়বে। সেগুলি ধীরে ধীরে সরে যাবে পৃথিবীর দুই মেরুর দিকে। যেহেতু দুই মেরুর বরফও ততদিনে গলে গিয়ে সমুদ্রের জলস্তর বাড়ানোর পাশাপাশি বরফের চাঙরের নিচে থাকা স্থলভাগকেও উপরে তুলে আনবে। আমাজন নদীর অববাহিকা আর ৪০০ বছরের মধ্যে একেবারেই শুকিয়ে যাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct