সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে, রাজারহাট: টানা অতি ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন রাজারহাট-নিউটাউন এলাকা। জলের তলায় কয়েক হাজার বিঘে জমির নার্শারি চাষ। ফুল, ফল এবং ঘাস চাষে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশংকায় মাথায় হাত উদ্যান পালকদের। দ্রুত জল নিষ্কাশন ও সরকারি ক্ষতি পূরণের দাবি চাষীদের।
কংক্রিটের শহরের মাঝখানে এক টুকরো সবুজের সমারোহ রাজারহাট ব্লকের চাঁদপুর অঞ্চল। এই অঞ্চলের কাদা, বাগু, নয়াবাদ, ঝালিগাছি, কাশিনাথপুর, আড়বেলিয়া, শিখরপুর, বাজেতরফ প্রভৃতি গ্রামে চাষ হয় নানা বাহারি ফুল ও ফলের। এমনকি ঘাস চাষও হয় এখানে। গোলাপ, জবা, টগর, চন্দ্র মল্লিকা, জুই, জিনিয়া, ডালিয়া প্রভৃতি দেশি-বিদেশি ফুলের চাষ করেন এখানকার চাষীরা। আম, লিচু, সফেদা, লেবু, ডালিম, পেয়ারা, কামরাঙা প্রভৃতি ফলের চারাও তৈরি করেন উদ্যানচাষীরা।
এই অঞ্চলের প্রধান জীবিকা হল উদ্যান চাষ। রাজারহাটের ঐহিত্য বহন করে চলেছে এই উদ্যান পালন। ফলের সমাহার ও ফুলের গন্ধে ঘুম ভাঙে এখানকার মানুষের। সুরভিত হয়ে থাকে গোটা এলাকা। এখানকার ফুল দিল্লি, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, ত্রিপুরাসহ ভিন রাজ্যে পাড়ি জমায়। উড়ে যায় নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ডসহ ভিনদেশেও।
ঐতিহ্যবাহী রাজারহাটের উদ্যান চাষে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হলেও সরকারি সহায়তা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ চাষীদের। আপনজন প্রতিনিধির কাছে উদ্যানচাষীরা অভিযোগ করেন আর্থিক সহায়তা তো দূরহস্ত, এখনও পর্যন্ত জল নিকষ্কাশনের জন্য কোনো ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি কৃষি আধিকারিক বা জনপ্রতিনিধি কেউ এলাকা পরিদর্শনেও আসেননি। তাদের দাবি সরকার তাদের পাশে দাড়াক। তাহলে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
উদ্যানচাষী ভোলানাথ সরদার বলেন, "আমার প্রায় ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখে দাড়িয়েছে। সরকারি সাহায্য ভীষণ প্রয়োজন।" উদ্যানচাষী ভূপেন সরদার অভিযোগ করেন, "আমার ৪ বিঘা জমি জলের তলায়। এখনও কোনো সরকারি আধিকারিক বা জনপ্রতিনিধি কেউ এলাকা পরিদর্শনে আসেননি। ক্ষতিপূরণ চাই।" জয়ন্ত মুখার্জি নামের এক উদ্যাচাষী অভিযোগ করে বলেন, " আমার প্রায় ১৫ বিঘা জমি জলের তলায়। আনুমানিক ১৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি হতে পারে! এখনও কেউ পরিদর্শনে আসেননি। আমরা চাই সরকার আমাদের সাহায্য করুক।" উদ্যানচাষী মদন নস্করেরও দাবি সরকারি সাহায্যের।
এবিষয়ে আপনজনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বিধায়ক তাপস চ্যাটার্জির কাছে জানতে চাওয়া হয়। আপনজন প্রতিনিধিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, " আমি নতুন বিধায়ক হয়েছি। বিষয়টি আমার সঠিক জানা ছিল না। আপনারা সত্যি একটি ভালো বিষয় আমাকে জানালেন। যেটা সংবাদ মাধ্যমের কাজ। আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি খুব শীঘ্রই এলাকা পরিদর্শনে যাব। ক্ষতিগ্রস্থ চাষী ভাইদের খোঁজ খবর নেব। যথাসাধ্য তাদের পাশে দাঁড়াবো।"
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct