আপনজন ডেস্ক: যে কোনো জিনিস শেখালে তারা নাকি খুব তাড়াতাড়ি শিখে নিতে পারে। মানবশিশুর থেকেও অনেক দ্রুত। গরুর কথা হচ্ছে। গরু প্রয়োজন হলে দরজা খুলে বাথরুমে যায়। ক্ষেতখামারে যেখানে সেখানে মূত্র ও মলত্যাগ করে না। কাজ হয়ে গেলে বাথরুম অপরিষ্কার হয় সেটা ভালোই বোঝে। তাই মূত্র ও মলত্যাগের পর বাথরুম পরিষ্কার করার জন্য ‘ফ্লাশ' টেনে দেয়। তারপর দরজা খুলে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসে। এটা কোনো গল্প নয়, সাম্প্রতিক গবেষণা এই নজরকাড়া খবর দিয়েছে ‘কারেন্ট বায়োলজি'-তে। গবেষণাটি চালিয়েছে, জার্মানির ‘রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর ফার্ম অ্যানিমাল বায়োলজি (এফবিএন)’ ও নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়। চাষবাসের এলাকা বাড়ায় ক্ষেতখামারে গবাদি পশুদের ত্যাগ করা বর্জ্য পদার্থ থেকে উত্তরোত্তর বাড়ছে বায়ুদূষণের মাত্রা। পরোক্ষে তৈরি হচ্ছে অত্যন্ত বিষাক্ত অ্যামোনিয়ার মতো গ্রিনহাউস গ্যাস। আর তার ফলে বাড়ছে উষ্ণায়নের বিপদ। যা দ্রুত হারে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অ্যামোনিয়া গ্যাস যে সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হয়, তা কিন্তু নয়। তবে গবাদি পশুর মাটিতে মেশা মল-মূত্র থেকে তৈরি হওয়া অ্যামোনিয়াকে ব্যাক্টরিয়া-সহ কয়েকটি অণুজীব বদলে দেয় নাইট্রাস অক্সাইডে। যা কার্বন ডাই-অক্সাইড ও মিথেনের পর তৃতীয় বিপজ্জনক গ্রিনহাউস গ্যাস। চাষবাস থেকেই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অ্যামোনিয়া গ্যাসের নির্গমন হয়। যার অর্ধেকের জন্যই দায়ী গবাদি পশুদের মল-মূত্র। গবেষকরা তাদের গবেষণায় আমজনতার তিনটি বহুপ্রচলিত ধারণার মর্মমূলে কার্যত আঘাত করেছেন। তারা দেখিয়েছেন, মূত্র ও মলত্যাগ করার জন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি নেয় গবাদি পশুরা। ব্যাপারটা এমন নয় যে অপেক্ষা করতে না পেরে তারা হঠাৎই মল-মূত্র ত্যাগ করে ফেলে সদ্যোজাত মানবশিশুর মতো। গবেষকরা দেখিয়েছেন, বাথরুমে গিয়ে মল-মূত্র ত্যাগ করার অভ্যাসে রপ্ত করাতে চাইলে তারা সেটা খুব তাড়াতাড়ি শিখে নিতে পারে। সদ্যোজাত মানবশিশু, এমনকি, দু’এক বছরের শিশুদের চেয়েও বেশি তাড়াতাড়ি এই অভ্যাসে রপ্ত করানো যায় ক্ষেতখামারের গবাদি পশুদের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct