আপনজন ডেস্ক: করোনা সারাতে এতদিন ভ্যাকসিনের কথা শোনা গেছে। এমনকী বাজের এসে গেছে। মানুষও তা নিচ্ছে। এবার কোভিড-১৯ রোগ সারাতে মুখে খাওয়া যায়—এমন ট্যাবলেটের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। রোগীদের জন্য সহজতর ও সাশ্রয়ী চিকিৎসা নিয়ে কাজ করছে ঔষধ কোম্পানিগুলো। যাতে মহামারিকে শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা সম্ভব হয়।
সবের অংশ হিসেবেই করোনা ট্যাবলেটের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। মোলনিপিরাভির নামের এ ভাইরাসনিরোধক নিয়ে উদ্যোক্তা সংস্থা রিজব্যাকের সঙ্গে কাজ করছে মার্কিনভিত্তিক মেরক। জাপানসহ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এর চূড়ান্ত অর্থাৎ তৃতীয় পর্বের পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার ফলাফল আগামী অক্টোবরের শুরুর দিকে পাওয়া যাবে।
জাপানভিত্তিক নিক্কেই এশিয়া এমন খবর দিয়েছে। চলতি বছরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রে মোলনিপিরাভিরের জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমতি চাইবে মেরক। এছাড়া আগামী এক কিংবা দুমাস পরে জাপানেও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন চাওয়া হতে পারে।
মূলত ফ্লু জাতীয় ভাইরাসের চিকিৎসায় উদ্ভাবন করা হচ্ছে মোলনিপিরাভির। কিন্তু করোনাভাইরাস প্রতিরোধেও এটি কাজ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নতুন এই ট্যাবলেটের সতেরো লাখ ডোজ কিনতে ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ। বছর শেষে এক কোটি ডোজ উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে মেরক।
উত্তর ক্যারোলাইনা চ্যাপেল হিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাসবিশারদ টিমোথি সিয়াহান বলেন, শুধু নিজেকে সুস্থ করে তোলাই নয়, অন্যের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতেও কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে এই ওষুধ।
তিনি বলেন, ইঁদুরের শরীরে মোলনিপিরাভির প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে, সার্স-কোভ-২ প্রজাতি রুখে দিচ্ছে ওই ওষুধ। পরে ওই পদ্ধতিতেই ট্যাবলেট তৈরি করা শুরু করেছে মেরেক ও রিজব্যাক। ২০২ জন ব্যক্তির উপর ওই ওষুধ প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে, শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া অনেকটাই কমে যাচ্ছে ওই ওষুধ প্রয়োগের পর।
ফাইজারও দুধরনের ভাইরাসনিরোধক উৎপাদন করতে যাচ্ছে। যার মধ্যে একটি মুখে খাওয়ার জন্য, অন্যটি ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় প্রবেশ করিয়ে দিতে।
২০০২ সালে শুরু হওয়া দ্য সিভিয়ার একিউট রেসপাইরেটরি সিন্ড্রোম বা সার্স চিকিৎসার ওপর ভিত্তি করে এ দুটি ওষুধ উদ্ভাবন করছে ফাইজার। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই, এমন মৃদু থেকে মাঝারি উপসর্গের রোগীদের কথা ভেবে ফাইজারের এই ওষুধ আবিষ্কার।
অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে এ দুই ওষুধের রোগীভিত্তিক পরীক্ষার ফল পাওয়া যাবে। পরের বছর থেকে চিকিৎসার জন্য পাওয়া যাবে এ ওষুধ।
করোনার চিকিৎসায় মুখে খাওয়া যায় এমন ওষুধ নিয়ে কাজ করছে জাপানি ওষুধ নির্মাতারাও। গেল জুলাইয়ে করোনাভাইরাসের ট্যাবলেটের প্রাথমিক পরীক্ষা চালিয়েছে জাপানি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান শিওনোগি। চলতি বছরেই যার ব্যাপকভাবে রোগীভিত্তিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ এই ওষুধ বাজারে আসতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct