আপনজন ডেস্ক: ভবানীপুরের উপনির্বাচনকে হালকা ভাবে নিতে চাইছেন না তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও তিনি প্রথম কর্মীসভার বৈঠকে দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন দিদি জিতে যাবেন বলে ঘরে বসে থাকলে চলবে না, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রমুখী করতে হবে। বুধবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আলিপুর বডি গার্ড লাইনে বক্তৃতা দিলেন প্রায় সেই সুরে। তবে, মমতার যে ভবানীপুরের প্রতি বিশেষ মোহ রয়েছে, তা তিনি যেমন এদিন পরিষ্কার করে দেন তেমনি বিজেপির উদ্দেশ্যে যোগ্য জবাব দেওয়ার বার্তা দিলেন। কেন ভবানীপুরের উপনির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, কেন সকল ভোটারের ভোট দেওয়া প্রয়োজন তা বলতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘এই ভোটের অন্য গুরুত্ব রয়েছে। ভাববেন না দিদি দাঁড়িয়েছে, তাই জিতে যাবে তো। সকলে ভোট দেবেন। প্রতিটি ভোট খুব দামি। আমি না জিততে পারলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হতে পারব না। তৃণমূল সরকার চালাবে, কিন্তু অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবে।’
আসলে, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী উপনির্বাচনে জিততে না পারলে এই মেয়াদে আর তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না। তাই ৫ নভেম্বরের মধ্যে জিতে আসতেই হবে। সেজন্য তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, মরণপণ লড়াইয়ে ভবানীপুরেই তার ভাগ্য নিহিত। তাই মমতার উপলব্ধি তার ভোটে জেতার ভাগ্য নন্দীগ্রামে নয়, ভবানীপুরেই। সেটাই নাকি তার ভাগ্যে লেখা আছে এমন মন্তব্য করতেও পিছপা হননি তৃণমূল সুপ্রিমো। এ নিয়ে মমতা বললেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হলে ভবানীপুর থেকেই জিততে হবে। এটাই ভবিতব্য। উপরওয়ালা লিখে রেখেছেন। তাই আপনাদের ছেড়ে আমার কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়।’ অবশ্য মমতা নন্দীগ্রামে তার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হয়েছে সেই কথা ফের এদিন তুলেছেন। সেই সঙ্গে বিজেপিকে ফের নিশানা করেন তিনি। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে যে মমতা পাখির চোখ করছেন তা এদিনের বক্তব্যে পরিষ্কার। এ প্রসঙ্গে বললেন, ‘ভোটের ময়দানে খেলা হবে। ত্রিপুরা, গোয়া, উত্তরপ্রদেশে খেলা হবে। বিজেপিকে দেশ থেকে হঠাবই।’ বাংলায় এক চারা রোপণ করার আহ্বান জানান যা দিল্লি গিয়ে অঙ্কুরিত হবে।
বিজেপিকে দাঙ্গাবাজ বলে অভিহিত করে বিজেপি হঠানোর কাজে ভবানীপুরের ভোটারদের এগিয়ে আসার ডাক দেন। তাই মমতা ঠান্ডা মাথায় ভোট দিয়ে তার উপর আস্থা রাখার আর্জি জানান। আর তৃণমূলকে সমর্থন করলে যে কোনও ভয় নেই তা নিয়ে বলেন, মনে রাখবেন তৃণমূলের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। ফলে বিজেপি আমাদের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। বাকি পাঁচ বছর সব পাহারাদারির দায়িত্ব আমাদের।
আর বিজেপির প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘তোমরা নিজেদেরর বুনো ওল মনে করলে আমরা কিন্তু বাঘা তেঁতুল।’
এদিনও মমতার প্রায় ছায়াসঙ্গী হিসেবে দেখা যায় তার নির্ভরযোগ্য সৈনিক ফিরহাদ হাকিমকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct