সেক আনোয়ার হোসেন, পটাশপুর: এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান ফানেলের মত। তাই কেলেঘাই,কাপালেশ্বরী বাগুই নদীর জলে কিংবা বিভিন্ন জলাধারের ছাড়া জলে ফি বছর পটাশপুর, ভগবানপুরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এবার এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে উদ্যোগী হচ্ছেন পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক। তিনি চান, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’এর মত‘পটাশপুর মাস্টার প্ল্যান’হোক।এ নিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাসক পূর্ণেন্দু মাজির সঙ্গে কথা বলেছেন পটাশপুরের নতুন বিধায়ক। রবিবার তিনি জানান,“ গত কয়েকদিন বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে বেরিয়ে পটাশপুরের বানভাসি মানুষের দুর্দশার চিত্র আমাকে খুব নাড়া দিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মিটলে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে, প্রয়োজনে সেচমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবো। পটাশপুর মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ নেব।”
এলাকার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। বাড়ছে জলস্তর। ফলে দিনরাত এক করে গত কয়েকদিন এলাকার জলবন্দি মানুষদের উদ্ধার থেকে তাঁদের ত্রাণ বন্টন সহ নানা কাজে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন উত্তম। বারবার বিডিও থেকে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত কর্তাদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৈঠক করেছেন। প্রতিনিয়ত কয়েকটি জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন বিধায়ক। পটাশপুর ২ ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিমপুর, ধুসরদা,বাগমারি সহ পঁচেট পঞ্চায়েত এলাকা এবং খাড় ৩ নম্বর অঞ্চলে জল বাড়ছে। বহু মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে কাছাকাছি ত্রাণশিবিরে উঠে আসেন। আবার পটাশপুর ১ ব্লকের গোকুলপুর ১গ্রাম পঞ্চায়েতের তাপিন্দা,পালপাড়া, অমর্ষি,ব্রজলালপুর,চিস্তিপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম একেবারে প্লাবিত।কেলেঘাই নদীর বাঁধভাঙা জলের তোড়ে ভগবানপুর ২ব্লকের ইটাবেড়িয়া,বাসুদেববেড়িয়া,আড়গোয়ল,অর্জুননগর,বরোজ প্রভৃতি অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।আড়গোয়াল- বরোজ ক্যানেলের জল পাউসি স্লুইস গেটের মুখে পাহাড়প্রমাণ জলরাশীর সৃষ্টি করেছে। ইটাবেড়িয়া বাজার এলাকা জলমগ্ন। ইটাবেড়িয়া রাইস মিলের ভিতর জল ঢুকে লক্ষ লক্ষ টাকার ধান ও চাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভগবানপুর এক ব্লকের বিভীষণপুর বাজার ইতিমধ্যে জলমগ্ন সংলগ্ন তালতলা বিদ্যুৎ সাবস্টেশন এখন এক কোমর জলের তলায়। ফলে শনিবার থেকেই বিস্তৃর্ণ এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।কোথাও গৃহস্হবাড়ীতে কোমর সমান জল। আবার কোথাও ভেঙে পড়ছে কাঁচাবাড়ি ।
পটাশপুর ও ভগবানপুর মিলিয়ে ২০ - ২৫ হাজার মাটির বাড়ি ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে প্রকাশ। এলাকার বিভিন্ন সবজি ও ধান জমি এখন জলের তলায়।এখনো জলবন্দি এলাকা থেকে এনডিআরএফ স্পিড বোটে করে মানুষদের উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে ইতিমধ্যে বানভাসি মানুষদের জন্য কমিউনিটি কিচেন শুরু করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এদিকে ভগবানপুর ও পটাশপুর জুড়ে যাতে দূষণ না ছড়ায়, তার জন্য যুব তৃণমূল কংগ্রেস বিভিন্ন এলাকায় ব্লিচিং ও ফিনাইল ছড়াতে শুরু করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct