নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর: শনিবার গভীর রাতে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কুশিদাগামী রাজ্য সড়কে কাপাইচন্ডী জয় বাংলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের শাসক দলের প্রধানের স্বামীর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালালো কিছু দুষ্কৃতী। যদিও এই ঘটনায় প্রধানের স্বামী আহত হলেও অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। তবে এলাকাবাসীদের তাড়া খেয়ে আক্রমণকারীরা মোটরসাইকেলে চেপে চম্পট দেয়। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এলাকার এক পক্ষের অভিযোগ, নলকূপ বসানো নিয়ে প্রধানের স্বামী ১০ হাজার টাকা কাটমানি চাওয়াতেই এই হামলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে প্রধানের স্বামী আব্দুর রশিদের অভিযোগের তীর কংগ্রেসের দিকে। পাল্টা কাটমানি ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা কটাক্ষ কংগ্রেসের। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
স্থানীয় সূত্রে খবর কুশিদা পঞ্চায়েতের বাগমারা গ্রামের মেম্বার আখতারী খাতুন তিনি এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। কিছুদিন আগে এক তৃণমূল কর্মী সঞ্জুর আলী নামে এক বাসিন্দার সঙ্গে বচসা হয় প্রধানের স্বামীর সঙ্গে। সেখানেই তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এই ঘটনার কয়েকদিন পরেই গতকাল গভীর রাত্রে প্রধানের উপর প্রাণঘাতী হামলা করা হয়। ঘটনার সঙ্গে এদের যোগ থাকার সূত্র দেখতে পাচ্ছে অনেকে। যদিও সঞ্জুর আলী নামক ওই বাসিন্দার পরিবারের দাবি তারা এ ঘটনার সঙ্গে কোন মতেই যুক্ত না। পঞ্চায়েত সমিতি থেকে তারা একটি নলকূপ পান তাদের বাড়িতে বসানোর জন্য। কিন্তু ওই নলকূপ বসাতে গেলে প্রধান ও তার স্বামী ১০ হাজার টাকা কাটমানি দাবি করে বসে। কিন্তু সঞ্জুর আলীর পরিবার ওই টাকা দিতে নারাজ। এ নিয়ে খানিকটা গণ্ডগোল হয়েছিল।
এদিকে আহত প্রধানের স্বামী আব্দুর রশিদ জানান গতকাল তিনি থানা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন রাত ১১ টা নাগাদ। কপাই চন্ডী বাসস্ট্যান্ডের কাছে তার উপরে চারজন মোটরসাইকেল আরোহী মুখ ঢাকা অবস্থায় এসে বাঁশ দিয়ে হামলা করে। তিনি কোনক্রমে প্রাণে বাঁচিয়ে এলাকায় আশ্রয় নেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে ওই মোটরসাইকেল আরোহীরা পালিয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে সঞ্জুর আলীর মা নূরসেবা বেবা সমস্তটাই ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমরা পঞ্চায়েত সমিতি থেকে একটি কল পেয়েছিলাম। সেটাই যখন লাগাতে চাই তখন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী এসে ১০ হাজার টাকা কাটমানি দাবি করে। না দিলে কল লাগাতে বাধা দেয়। এবং পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
যদিও এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক সভাপতি মানিক দাস জানান সঞ্জুর আলী তৃণমূলের সদস্য ছিল। সে সময় পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ওর নামে একটা নলকূপ বরাদ্দ হয়। এখন বর্তমানে ওর সঙ্গে স্থানীয় প্রধানের কিছু মনোমালিন্য হয়েছে। তার জন্যই হয়তো ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। দল সমস্ত দিক খতিয়ে দেখবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct