আপনজন ডেস্ক: উত্তর প্রদেশের বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির সংলগ্ন জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে মন্দিরের উপস্থিতি আছে কিনা খুঁজে বের করতে প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল আর্কেওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াকে। সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
বিচারপতি প্রকাশ পাড়িয়ার হাইকোর্ট বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছে যে বারাণসী আদালতের মন্দির-মসজিদ কমপ্লেক্সের এএসআই জরিপের জন্য দায়ের করা আবেদনের ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি। আদালত বলেছে যে হাইকোর্ট এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত বারাণসী আদালতের পক্ষে এই বিষয়ে এগিয়ে যাওয়া উপযুক্ত নয়।
সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ ফারুকি জানিয়েছেন, অযোধ্যার রায়ে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সংবিধান বেঞ্চ উপাসনাস্থল আইন বহাল রেখেছে। তাই বারাণসী আদালতের আদেশ সন্দেহজনক ছিল।
উল্লেখ্য, বারাণসী আদালত এএসআইকে ২০১৯ সালে শহরের এক আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে জ্ঞানবাপী মসজিদের সরজমিন প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা করতে বলেছিল। এই আবেদনটি ১৯৯১ সালের একটি মামলার সাথে যুক্ত করা হয়েছিল, যেখানে একদল নগরবাসী যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব ১৬৬৪ সালে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ভেঙে ওই মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপরই একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। ১৯৯১ সালের মামলার চ্যালেঞ্জ শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতে পৌঁছেছিল, যা এই বছরের মার্চ মাসে এই বিষয়ে তার আদেশ বহাল রাখা হয়।
আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি এবং সুন্নি কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ড ১৯৯৮ সালে এলাহাবাদ উচ্চ আদালতে আবেদন করে বলেছিল যে উপাসনাস্থল (বিশেষ বিধান) আইন ১৯৯১ অনুযায়ী ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টের আগে উপাসনাস্থলের অবস্থানের কোনও পরিবর্তন নিষিদ্ধ। তাই তা অন্য কিছুতে রূপান্তরিত বেআইনি।
তবে মামলাটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ফের বারাণসী সিভিল কোর্টে ওঠে। সেই সময় বিজয় শঙ্কর রাস্তোগি নামে মন্দিরের এক পুরোহিত আর্জি জানিয়েছিলেন, মন্দিরের প্রমাণ পেতে মসজিদ চত্বরের মাটি খনন করা হোক। সেই আর্জি মেনে বারাণসী সিভিল কোর্ট এএসআইকে জ্ঞানবাপী মসজিদ খননের নির্দেশ দিয়েছিল। বারাণসী সিভিল কোর্ট সেই সঙ্গে আর্কেওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার এই সশরীরে সমীক্ষা খতিয়ে দেখতে দু’জন হিন্দু ও দু’জন মুসলিম সদস্য এবং একজন প্রত্নতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল এছাড়া বলা হয়েছিল, আদালতের নির্দেশ ছাড়া সংবাদমাধ্যমে কোনও বিবৃতি দেওয়া যাবে না। অবশেষে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে অনেকটাই স্বস্তি পেল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct