রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ: মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে আবারও গঙ্গা ভাঙন দেখা দিল। গত বছরের স্মৃতি উস্কে আবারও সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখল নদী পারের মানুষ, চোখের সামনে নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে আস্ত একটা ইট ভাটা, একটু একটু করে তলিয়ে যাচ্ছে ইট ভাটার জায়গা। চোখে জল আর একরাশ হতাশা নিয়ে নদী পারে আর্তনাদ আর হাহাকার। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই শুরু হয়েছে ভাঙন সামসেরগঞ্জের শিকদারপুরে।
কিছুদিন আগে গঙ্গা ভাঙন দেখা দিয়েছিল বেশ কিছু এলাকায় যেমন শিবপুর, হিরানন্দপুর, ধুসরীপাড়া, ধানঘরার পর এবার সিকদারপুর গ্রাম নদী গর্ভে গ্রাস হচ্ছে। প্রথমেই ছয়শো টি পরিবারের মুখের হাসি কেড়ে নিতে চলেছে এই রাক্ষসী গঙ্গা, সিকদারপুর গ্রামে একটি আমির ব্রিট ফিল্ট নামের বিশাল আকারের ইট ভাটা রয়েছে সেখানে প্রায় স্থানীয় ছয়শো জন শ্রমিক রয়েছে এই ইট ভাটায়। ছয় শো পরিবারের জীবিকার এক মাত্রই পথ, আর এই ভাটা টি প্রথম চলে যাচ্ছে নদী গর্ভে আর এতেই চিন্তায় চোখের ঘুম উড়ছে এই শ্রমিদের। তাদের দাবি সরকার যদি সঠিক সময়ে নদী ভাঙ্গনের স্থায়ী সমাধান করতো আজ এই ছয়শো শ্রমিকদের একমাত্র জীবন জীবিকা ইট ভাটাটি বেঁচে যেতো।
ইট ভাটার মালিক আমির হোসেন বলেন আমার এই ভাটাতে প্রায় ৭ লক্ষ ইট ছিলো কিছুটা টানতে পেরেছি বাকি পাঁচ ছয় লক্ষ ইট নদী গর্ভে চলে গিয়েছে, এবং আস্তে আস্তে পুরো ইট ভাটা টি পুরো নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন আমার ইট ভাটার পঞ্চাশ মিটার পিছনে অনেক বাড়ি রয়েছে আস্তে আস্তে সেই বাড়ি গুলো তলিয়ে যাবে নদীর গর্ভে, আমির হোসেন বলেন আমার এই ইট ভাটা তিন বছর হলো তৈরি হওয়া, এই ভাটাতে স্থানীয় ছয়শো জন শ্রমিক কাজ করেন তারা প্রত্যেকেই কাজ হারাবেন তাই সরকারের কাছে ক্ষতি পূরণ চাইছি যাতে আমি সব শ্রমিকদের কাজ দিতে পারি।
ভাটার এক শ্রমিক হাকিম শেখ বলেন, আমি তিন বছর ধরে এই ভাটায় কাজ করছি এই ভাটা থেকেই আমার পরিবার চলে, ভাটা তো নদীতে পড়ে যাচ্ছে ভাটা মালিক তো আর আমাদের কাজ দিবেনা, সে আবার দিবে কি করে মালিকেরতো কিছুই থাকলো না সব নদীতে পড়ে গেল। এখন ভাবছি আমার পরিবারের কি হবে আমি কোথায় যাবো কে নিবে আমায় কাজে এই শেষ বয়সে তাই চিন্তায় দিন কাটাচ্ছি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct