আপনজন ডেস্ক: অসমে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি সরকার। সেই বিজেপি সরকারের শাসনে রাজধানী গুয়াহাটির কয়েকটি কলেজ অনার্স কোর্সে ভর্তির আবেদনপত্র পূরণকে কেন্দ্র করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অনলাইন পরীক্ষার ফর্মে সরাসরি লিখতে বলা হয়েছে আবেদনকারী ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, মুসলিম না বৈশ্য প্রভৃতি। এর ফলে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, তিন বছরের ডিগ্রি কোর্সের জন্য অনলাইনে ভর্তি ফর্ম পূরণ শুরু হয়েছে অসম জুড়ে। কিন্তু স্বতন্ত্র ভূমিকা নিয়েছে গুয়াহাটির স্বনামধন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হান্ডিক গার্লস কলেজ, কর্মশ্রী হিতেশ্বর শইকিয়া কলেজ, আর্য বিদ্যাপীঠ কলেজ।
সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ফর্ম পূরণের সময় সংরক্ষণ কিংবা বৃত্তি পাওয়ার জন্য উল্লেখ করতে হয় এসসি, এসটি, সংখ্যালঘূ কিংবা সাধারণ শ্রেণির কিনা। কিন্তু এই তিনটি কলেজ ফর্ম পূরণের সময় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে তারা নির্দিষ্টভাবে ব্রাহ্মণ, গণক, কলিতা, কায়স্থ, মুসলিম, শূদ্র, বৈশ্য প্রভৃতি শ্রেণির কিনা লিখতে বলা হয়। এটি আসন সংরক্ষণের পাশাপাশি বৃত্তির উদ্দেশ্যে করা হয়।সদ্য গঠিত অসমের রাজনৈতিক দল অসম জাতীয় পরিষদ (এজেপি) এর প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছে।
এজেপি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘যখন মানুষ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির পথে সভ্যতার শিখরে উঠছে, তখন অসম সরকার একটি পশ্চাদপদ পদক্ষেপ নিচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যকে উৎসাহিত করার অভিযোগ এনে দলটি বলেছে, এই সিদ্ধান্ত মানুষকে বিভক্ত করবে এবং সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করবে।
বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই এবং ছাত্র মুক্তি সংগ্রাম সমিতিও বিষয়টি নিয়ে অসমের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করেছে। এসএফআই -এর কামরুপ (মেট্রো) জেলা কমিটির সভাপতি হিমাংশু বোরা বলেন, এটা জাতি বৈষম্য ছাড়া আর কিছুই নয় এবং এটি অসমের ইতিহাসে শোনা যায় না। ছাত্র সংগঠন এবং এজেপি উভয়ই ভর্তি ফর্ম থেকে অবিলম্বে এই প্রশ্নগুলি সরানোর দাবি করেছে। কর্মশ্রী হিতেশ্বর সাইকিয়া কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য ভর্তির জন্য ওয়েব পেজ তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিক্রেতাকে দোষারোপ করেছে। তারা বলেছিল যে কলেজটি জাত পরিচয় দেওয়ার বিষয়ে কোন নির্দেশ জারি করেনি।
শিক্ষা দফতরের বিশেষ সচিব প্রীতম সাইকিয়া বলেন, জাত নির্ণয় রাজ্য সরকারের নীতি নয়। আমরা কলেজগুলি থেকে তথ্য সংগ্রহ করছি এবং এটি খতিয়ে দেখছি। আমাদের কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। কলেজগুলি সম্ভবত স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তিনি বলেন, এটা কোনো সরকারি নীতি নয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct