কুতুবউদ্দিন মোল্লা, ক্যানিং: বিভিন্ন সময়ে ভূয়ো আইপিএস, আইএএস, কলকাতা পুলিশ, সিআইডি সহ অন্যান্য আধিকারিক সেজে প্রতারণ করার ছক করে চলেছে প্রতারকরা। পুলিশের হাতে ধরাও পড়ছে ওই সমস্ত ভূয়ো আধিকারিকরাও। এবার শুল্ক দফতরের আধিকারিক সেজে ৫১ হাজার টাকা হাতিয়ে চম্পট দিল এক প্রতারক। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার বিকালে ক্যানিং থানার বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায়।
জানাগিয়েছে বুধবার সকালে বাসন্তী থানার রামচন্দ্র খালি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে এক ভদ্রলোক সুসজ্জিত পোশাক পরে হাতে দুটো দামী মোবাইল ফোন নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। সেই সময় স্থানীয় সোনাখালির বাসিন্দা শিবপদ নস্কর ও সুভাষ নস্করের সাথে আলাপ হয়। ওই দুই ব্যক্তির কাছে শুল্ক দফতরের অফিসার হিসাবে পরিচয় দেয় এবং ১২৬ বস্তা(৬৩ কুইন্ট্যাল) চোরাই চাল ধরেছে বলে জানায়।
এছাড়াও ওই দুজনকে ভূয়ো আধিকারী জানায় উদ্ধার হওয়া চোরাই চাল ৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবেন। সেই মতো ওই দুই ব্যক্তি কিছু চাল কেনার জন্য রাজীও হয়ে যায়। কথা হয় ২৬ হাজার টাকার চাল কিনতে সক্ষম তারা। এরপর ঘটনাস্থলে ভূয়ো ওই আধিকারিক জীবনতলা এলাকার এক মোটর ভ্যান চালক কে ক্যানিং থেকে কিছু চাল ধামাখালিতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৮০০ টাকার চুক্তি করে। পরে তাকেও চাল বিক্রি করার কথা বলে ২৬ হাজার টাকা জোগাড় করে ক্যানিংয়ের ১ বিডিও অফিসের সামনে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেখা করতে বলেন।
ওই তিন ব্যক্তি ভূয়ো আধিকারিকের কথা মতো যথারীতী আধার কার্ডের জেরক্স এবং টাকা নিয়ে ক্যানিং ১ বিডিও অফিসের সামনে রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশ সংলগ্ন একটি চায়ের দোকানে দেখা করে। সেখানে চা,পান খেয়ে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে মোট ৫১ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে ক্যানিংয়ের খাদ্য দফতরের অফিসে আসতে বলে একটি টোটো গাড়িতে চেপে চম্পট দেয়। প্রতারিত তিন ব্যক্তি ক্যানিংয়ের খাদ্য দফতরের গোডাউনে গিয়ে ভূয়ো আধিকারিকের কোন খোঁজ না পেয়ে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে ক্যানিং থানায় ভূয়ো ওই আধিকারিকের ফোন নম্বর (৭৬০২৩৭৪৮৬৯) ও একটি ছবি দেখিয়ে মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানায়।প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ পেয়ে ভূয়ো ওই শুল্ক দফতরের আধিকারিকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ।প্রতারিত তিন ব্যক্তি সুভাষ নস্কর,শিবপদ নস্কর,বনমালী হালদার’দের দাবি “আমরা সুন্দরবন এলাকার মানুষ। বিগত দিনে ইয়াস এবং প্রবল বর্ষণে চাষবাস নেই। পরিবারের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য ওই অফিসারের কথায় চাল কিনতে রাজী হয়ে যাই। প্রতারিত হতে হবে বুঝতে পারিনি।’
ক্যানিং রবীন্দ্র মূর্তি সংলগ্ন এলাকার ব্যবসায়ী অলোক রায়,হাসনারা সেখ’রা জানিয়েছেন আমাদের দোকানে বসে চা,পান,সিগারেট খেয়ে টাকা লেনদেন করছিল ওরা। কিছু বুঝতে পারিনি। পরে ওই তিনজনের কান্নাকাটি শুনে বুঝতে পারি তারা প্রতারিত হয়েছে।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct