অমরজিৎ সিংহ রায়, বালুঘাট: আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের মহিলাদের ঋতুস্রাব সম্পর্কে সচেতন করতে ও পুরনো নোংরা কাপড়ের পরিবর্তে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে বোঝাতে বিশেষ উদ্যোগ নবদিগন্তের। 'ফ্রিডম' নামক একটি প্রকল্পের মধ্য দিয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয় মহিলাদের মধ্যে, বোঝানো হয় ঋতুচক্রের বিষয়ে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রযুক্তি অনেক এগিয়ে গেলেও ঋতুস্রাব নামক স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া টিকে এই সমাজে অনেক ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ বিষয় হিসেবে ভাবা হয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে যেন শুরু হয় রাখঢাক-তার সাথে লজ্জা তো রয়েছেই।পাশাপাশি সচেতনতার অভাবে পরিষ্কার পরিছন্নতার বিষয়টিকেও অনেক ক্ষেত্রেই নজর দেয়া হয় না। না আর লজ্জা নয়! কথা বলতে হবে, সচেতন হতে হবে। তাইতো গ্রাম-বাংলার কন্যাশ্রী, দশোভূজারা সে দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধেই। এবড়োখেবড়ো, জলাশয়ের রাস্তা পার হয়ে- পায়ে হেঁটেই প্রিয়াঙ্কা মজুমদার, শর্মিষ্ঠা মন্ডল, অমৃতা সাহা, শ্রেয়া দাস, মৌসুমী সাহা, সুচরিতা পান্ডে'রা পৌঁছে যায় প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রামটিতে। গ্রামটি মানে- দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হিলি ব্লকের অন্তর্গত বকশিগঞ্জ আদিবাসী পাড়া, বইগ্রাম, ওঁরাও পাড়া। প্রভৃতি গ্রামের মহিলাদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয় তাদের তরফে। পাশাপাশি গ্রামের মহিলাদের হাতে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিনামূল্যে তুলে দেওয়া হয়।
এবিষয়ে নব দিগন্ত নামক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে অমিত সাহা জানান, আমাদের ভারতবর্ষের অধিকাংশ লোকই গ্রামে বাস করে! এদের মধ্যে অধিকাংশই স্যানিটারি ন্যাপকিন এর সম্মন্ধে জানে না। ফলে আমরা একটি আদিবাসী গ্রামে গিয়ে সেখানকার মহিলাদের সচেতন করি।স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে তাদের বোঝানো হয় । মাসিক চলাকালীন অনেকেই নোংরা কাপড় ব্যাবহার করে থাকে! এর ফলে ক্যান্সার, লিউকেমিয়ার মত রোগ ধরা পড়ছে। তাই , এই রোগ এড়িয়ে যেতে ও সুস্বাস্থ্য থাকতে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি! এর উপকারিতা বোঝাতে ১০০ প্যাকেট স্যানিটারি ন্যাপকিন বিনামূল্যে তাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণের মাধ্যমে সচেতনতার বার্তা গ্রামের মহিলাদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়াই ছিল আমাদের মূল উদ্দশ্য।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct