আপনজন ডেস্ক: ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতির বাস্তবায়ন করতে তৃণমূল কংগ্রেস এবার ব্যাপক রদবদল করল তাদের সাংগঠনিক কর্তাব্যক্তিদের। রাজ্যস্তর থেকে জেরা স্তর এমনকী ব্লক স্তরেও এই পরিবর্তন করা হয়েছে। যার ফলে কোনও মন্ত্রী জেলার সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকছেন না। যার ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর, নদিয়া, কলকাতা, হাওড়া সহ বেশ কয়েকটি জেলাকে সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা কমিটিকে ভেঙে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে সোমবার এক তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে তৃণমূল নেত্রীর বরাত দিয়ে।
এই রদবদলের ফলে বহু জায়গায় গোষ্ঠী কোন্দল ঠেকাতে দুটি বাবেগ ভাগ করা হয়েছে জেলার কমিটিকে। এই দলীয় নীতির জন্য উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতির পদ থেকে বাদ পড়লেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। পূর্ব মেদিনীপুরের সভাপতি পদ থেকে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যানের পদ থেকে মলয় ঘটককে, পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল জেলা সভাপতির পদ থেকে স্বপন দেবনাথকে, হাওড়া সদরের তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায়কে, হাওড়া গ্রামীণের জেলা সভাপতি পুলক রায়কে সরানো হয়েছে। মালদা জেলা সভাপতি পদ থেকে মৌসম বেনজির নুরকে সরিয়ে বসানো হয়েছে আব্দুর রহিম বক্সিকে।
১০ জন রাজ্য কমিটি গঠন করা হযেছে যার মধ্যে, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কমিটিতে দুজন ভাইস প্রেসিডেন্ট। একজন হলেন শুভাশিস বটবল, অন্যজন হলেন মুহাম্মদ সোহরাব।
আটজন জেনারেল সেক্রেটারির পদে রয়েছেন তাদের মধ্যে স্থান পেয়েছেন ক্যািনং পূর্ব বিধানসভার বিধায়ক সওকত মোল্লা। রাজ্য কমিটি আর মুর্শিদাবাদ ছাড়া তৃণমূলের এই রদবদলে সংখ্যালঘুদের ব্রাত্য করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
কলকাতা, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব মেদিনীপুরে. পশ্চিম মেদিনীপুর সহ বেশ কয়েখটি জেলায় কোনও কমিটিতে সংখ্যালঘু স্থান পায়নি।
‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতির বাস্তবায়ন করতে তৃণমূল কংগ্রেস যে রদবদল ঘটিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে মোট ২৯৪ জনকে দলীয় পদ দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে মুসলিম মাত্র ৩১জন। আর মুসলিমের মধ্যে তিনজন মহিলা স্থান পেয়েছেন। তারা হলেন, জলপাইগুড়ি জেলার মহিলা তৃণমূলের প্রেসিডেন্ট নুর জাহান বেগম, বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ ইউনিটের জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট শাহনাজ বেগম ও জঙ্গিপুর জেলা ইউনিট কোর কমিটির মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট হালিমা খাতুন
সংখ্যালঘু প্রধান জেলা উত্তর দিনাজপুরে ৯জনের মধ্যে একজনও সংখ্যালঘু স্থান পাননি। মালদা জেলায় আটজনের মধ্যে জেলা প্রেসিডেন্ট পদে স্থান পেয়েছেন আব্দুর রহিম বক্সি।
মুর্শিদাবাদ জেলায় ১৯ জনের মধ্যে ১০জন সংখ্যালঘু। জ্িঙ্গপুর জেলা ইউনিট কোর কমিটির প্রেসিডেন্ট খলিলুর রহমান।
জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট হালিমা খাতুন, যুব তৃণমূল প্রেসিডেন্ট আহসান হাবিব পারভেজ, জেলা অাইএনটিটিইউসি প্রেসিডেন্ট আমিরুল ইসলাম, আবু তাহের খান, শাহনাজ বেগম, আনারুল ইসলাম, ফিরোজ সেখ, মাহবুব আলম ও কামরুজ্জামান মণ্ডল।
নদিয়ায় ২২ জনের মধ্যে মাত্র একজন সংখ্যালঘূ। তিনি হলেন জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান ও বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ (লাল)। উত্তর ২৪ পরগনায় ৯৭ জনের মধ্যে ১৬জন মুসলিম।
কলকাতায় ১০ জনের কমিটিতে একজনও সংখ্যালঘূ নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৭ জন ও পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬ জন, পশ্চিম মেদিনীপুুরে ১৭ জন, ঝাড়গ্রামে ৬ জন, বাঁকুড়ায় ১৩ জন, পুরুিলয়ায় ৯ জন, আলিপুরদুয়ারে ৮জন, কোচবিহারে ১৪জন, দার্জিলিং ও কালিম্পংয়েং ১০ জন, দক্ষিণ দিনাজপুরে সাতজনের কমিটি গড়া হলেও তাতে কোনও সংখ্যালঘু স্থান পায়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct