আপনজন ডেস্ক: আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দক্ষিণের চর আসিয়াব শহরে পৌঁছে গেছে তালিবান। এরই মধ্য দেশটির ৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে ১৮টিই দখল করে নিয়েছে এই সশস্ত্র গোষ্ঠী।শনিবার চর আসিয়াব শহরে তালিবানের পৌঁছানোর খবরটি নিশ্চিত করেছেন লগার প্রদেশের আইনপ্রণেতা হোদা আহমাদি। কাবুলের দক্ষিণের এই প্রদেশও চলে গেছে তালিবানের হাতে। আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহার ও তৃতীয় বৃহত্তম শহর হেরাতও এখন তালিবানের দখলে।
বৃহস্পতিবার কয়েকটি শহর দখলে নেয় তালিবান। নতুন দখল করা শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে কালাত, তেরেনকোট, পুল-ই-আলম, ফিরুজ কোহ, কালা-ই-নাও ও লস্করগাহ। এর মধ্যে লগার প্রদেশের রাজধানী হলো পুল-ই-আলম। এই শহর কাবুল থেকে মাত্র ৩০ মাইল দূরে। বালখ প্রদেশের মাজার-ই-শরিফ শহরেও তীব্র আঘাত হেনেছে তালিবান। উত্তর আফগানিস্তানের এই শহরটি একসময় তালিবানের শক্ত ঘাঁটি ছিল। বালখ প্রদেশের গভর্নরের মুখপাত্র মুনির আহমেদ ফরহাদ জানিয়েছেন, চতুর্দিক থেকে শহরটিতে হামলা চালিয়েছে তালিবান। এর আগে গত বুধবার আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি মাজার-ই-শরিফ সফর করেন। শহরটি রক্ষায় তিনি সেখানকার তালিবানবিরোধী যোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। এদিকে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‘কাবুল আসন্ন হুমকিতে নেই। আপনি যদি তালিবানের কর্মকাণ্ডের দিকে দৃষ্টি ফেরান, তবে দেখতে পাবেন, তারা কাবুলকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা এমন সময়ে এ কথা বলেছেন, যখন মার্কিন কূটনীতিকদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য অতিরিক্ত তিন হাজার সেনা আফগানিস্তানে পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে একই ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাজ্য।
আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনী ও তালিবান যোদ্ধাদের লড়াইয়ের বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। জাতিসংঘের তথ্যমতে, সংঘাতে শুধু গত মাসেই এক হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে। যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর হারিয়েছে।
প্রাণ বাঁচাতে সংঘাতপূর্ণ এলাকা ও শহরগুলো থেকে হাজারো সাধারণ মানুষ নিরাপদে আশ্রয়ের আশায় রাজধানী কাবুলের দিকে ছুটছে। বাস্তুচ্যুত সাধারণ মানুষের জন্য আশপাশের দেশগুলোকে সীমান্ত খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct