আপনজন ডেস্ক: আগামী ১৫ বছরেই পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়বে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল এই শতকের শেষে। এমন আশঙ্কার বার্তা দিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্যানেল আইপিসিসি।
জাতিসংঘের ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ বা আইপিসিসি সোমবার একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাদের গবেষণায় দেখা যায়, এ শতকের শেষ নাগাদ পৃথিবীর উপরিভাগের তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, তা আগামী দেড় দশকেই পেরিয়ে যাবে। আইপিসিসি এমন একটি সময়ে তাদের গবেষণার ফল প্রকাশ করলো, যখন পৃথিবীর অনেক দেশেই রেকর্ড তাপমাত্রা দেখা যাচ্ছে, দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে বনাঞ্চল। এছাড়া পৃথিবীর সব অঞ্চলেই দেখা দিচ্ছে অতিবৃষ্টি, বন্যা।
‘‘এই প্রতিবেদনটি হলো বাস্তবতা,’’ বলেন আইপিসি ওয়ার্কিং গ্রুপের কো-চেয়ার ভেলেরি ম্যাসন-ডেলমট। প্রতিবেদনটি বলছে, জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন করে মানুষ পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাকশিল্পযুগের চেয়ে এরই মধ্যে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়িয়ে ফেলেছে (০.৮ ডিগ্রি সে. থেকে ১.২ ডিগ্রি সে.)। এর অর্থ গড়ে প্রতি দশকে মানবসৃষ্ট কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েছে ০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
‘‘রিপোর্টের ফল দেখে এটা নিশ্চিত যে আমরা এরইমধ্যে একটি জলবায়ু সংকটের ভেতর পড়ে গেছি,’’ বলেন জুরিখভিত্তিক বিজ্ঞানী সোনিয়া জেনেফিরাটনে।
প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে অতিবৃষ্টির হার বাড়ে ৭ ভাগ। বাড়ে শক্তিশালী সাইক্লোনের হার। প্রতিবেদনটি বলছে, পৃথিবীর তাপমাত্রা আর ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে প্রতি শতকে দুই থেকে তিনবার ভয়ঙ্কর অতিবৃষ্টির কবলে পড়বে পৃথিবী। প্রতি দশকে একবার প্রচণ্ড খরায় অধিকাংশ জমি শুকিয়ে যাবে এবং চারবার উর্বরতা হারাবে। হিট ওয়েভ বা তাপপ্রবাহের ঘটনা এরই মধ্যে বেড়েছে ২.৮ গুণ। আর একটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়লে তা ৯.৪ গুণ বাড়বে এবং তাপমাত্রা বাড়বে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct