আপনজন: বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষণ দিতে গিয়ে দাবি করলেন, অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্যের আদিবাসী মা-বোনেরা অনেক ভালো রয়েছেন। শান্তিতে রয়েছেন। তাই তাদের শুধু রেখেই সন্তুষ্ট থাকতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। তাদের সম্পূর্ণ উন্নয়নের বিকাশে বাংলার সরকার তৎপর আছে বলে জানিয়ে দিলেন।
এদিন দুপুরে হেলিকপ্টারে করে ঝাড়গ্রামে ঘড়াধরা স্টেডিয়ামে আদিবাসী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে মমতা হাজির হয়েই আদিবাসীদের নৃত্যের তালে তালে নিজেও নাচতে থাকেন মঞ্চে। পাশাপাশি ধমসা এবং ঝুমকা বাজান। যদিও এভাবে অতীতে রাজ্যের অন্য কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে আদিবাসীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচতে দেখা যায়নি। তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন, আদিবাসীদের প্রতি তিনি নিবেদিত প্রাণ। তাই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মমতা জানান, বাংলার আদিবাসী মানুষজন তাদের সৃষ্টি এবং কৃষ্টির ঐতিহ্যকে যেভাবে তুলে ধরে রেখেছেন তার পাশে সদাই থাকবে রাজ্য সরকার। সারনা এবং শারি ধর্মকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ইতিমধ্যে অনুরোধ জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এবার আদিবাসীদের জমি যাতে কেউ দখল করতে না পারেন তার জন্য রাজ্য সরকার প্রচেষ্টা চালাবে।
এ নিয়ে বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আইন করেছি যেখানে আদিবাসী মানুষদের জমি কেউ দখল করতে পারবে না, হস্তান্তর করতে পারবে না। আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেছি সারা ভারতবর্ষে আদিবাসী মানুষদের জমি যেন যখন বা অধিগ্রহণ করা না হয়।
এদিন নানান পরিসংখ্যান তুলে দরে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন তিনি আদিবাসীদের জন্য কি কি উন্নয়ন করেছেন তৃণমূলের শাসনামলে। মমতা বলেন, বাংলার আদিবাসী ও তপশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষজনের যাদের ৬০ বছর হয়ে গিয়েছে তারা পেনশন পাচ্ছেন। সামনে যে দুয়ারে সরকার বসবে, সেখানে যাদের ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়স হয়েছে তারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে ৫০০ এবং ১০০০ টাকা করে পাবেন।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান মঞ্চে ছিলেন ঝাড়গ্রাম এর চার বিধায়ক এবং প্রাক্তন সাংসদ ডাক্তার উমা সরেন। মঞ্চে ছিলেন মানস ভুঁইয়া, শ্রীকান্ত মাহাতো জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে লোধা শবর সমাজের গুণীজন হিসেবে খ্যাত প্রহ্লাদ ভোক্তাকে সম্বর্ধিত করেন। এবং তার লিখিত বেশ কয়েকটি বই তিনি উপহার হিসেবে গ্রহণ করেন। এছাড়াও আদিত্য কিস্কু থেকে শুরু করে একাধিক গুনে মানুষজনকে তিনি সম্বর্ধিত করেন।
রাজবাড়িতে রাত্রিযাপনের পর মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম থেকে সেখান থেকে ঘাটালে যাবেন হেলিকপ্টারে করে ৷ সেখানে বন্যা পরিস্থিতি ক্ষতিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকও করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct