নিজস্ব প্রতিবেদক, খানাকুল: হুগলি জেলার খানাকুল থানা এলাকার মাইনান গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার আলো জ্বারিয়ে আসছে নাবাবিয়া মিশন। এই মিশনের কর্ণধার সাহিদ অাকবরে নিপুণ দক্ষতায় রাাজ্যের সংখ্যালঘু পরিচালিত মুসলিম মিশনারি স্কুলের মধ্যে এক বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।
পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে নাবাবিয়া মিশনে। আবাসিক এই সংখ্যালঘু মিশন থেকে প্রতি বছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে পড়ুয়ারা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এ ব্যাপারে সাহিদ আকবর জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে নাবাবিয়া মিশন থেকে পরীক্ষার্থীরা এ বছর বেশ ভাল করে যখন মিশনের মুখ উজ্জ্বল করেছে এবং খুশির আবেগ ঘটিয়েছে তখন নেমে এসেছে এক দুঃখজনক ঘটনা। খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ায় বাদ যায়নি নাবাবিয়া মিশন।
এ ব্যাপারে সাহিদ আকবর জানান, সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। বাদ যায়নি পার্শ্ববর্তী জেলা হুগলির খানাকুল এলাকাও। বন্যা পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে পুরো নাবাবিয়া মিশন এখন জলের তলায়। ফলে, স্কুল পরিচালনা ও শিক্ষাদানে যুক্ত থাকা মিশনের প্রায় শতাধিক কর্মী স্কুলের মধ্যে দিনযাপন করছেন। আর বাইরেটা রূপ নিয়েছে নদীর। গলা বুক জলের মধ্য দিয়ে হেঁটে নিয়মিত স্কুল কর্মী ও শিক্ষকদের খোঁজ নিয়ে চলেছেন নাবাবিয়া মিশনের মানবিক কর্ণধার তথা সম্পাদক সাহিদ আকবর।
জলের মধ্যে সাপ পোকা মাকড়ের ভয়ডর না করে সাহিদ আকবর প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কীভাবে এই জলমগ্ন অবস্থা থেকে রেহাই দেওয়া যায়। নাবাবিয়া মিশন জলের তলায় থাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যাতে কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট না হয় তার জন্য সদা সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন সাহিদ আকবর। মিশনের নীচের তলা জলের তলায় চলে যাওয়ায় কর্মী ও শিক্ষকদের এখন দিনযাপন করতে হচ্ছে দোতলায় অথবা স্কুলের খোলা ছাদে। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। সাহিদ আকবর আরও জানান, স্কুলের যাবতীয় কাগজপত্র জলের ভিজে যাওয়ায় প্রচুর নথি নষ্টের সম্ভাবনা রয়েছে। ক্ষতির বহর ছাপিয়ে যাবে কোটি টাকা। তবে, শুধু যে নাবাবিয়া মিশনের ক্ষতি হয়েছে তা নয়, বিস্তীর্ণ খানাকুলের এলাকার যাবতীয় ফসল, সব্জির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে গবাদি পশুরও। তাই বন্যা দুর্গত মানুষদের সাাহয়্যে এগিয়ে আসার আর্জি জানিয়েছেন সাহিদ আকবর। যদিও সাহিদ আকবর নিজে তার সাধ্যমতো ইতিমধ্যে দুর্গত মানুষদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। সেই সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, কীভাবে নাবাবিয়া মিশনকে জলমুক্ত করা যায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct