আপনজন ডেস্ক: দিন পনেরো আগে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচাের্যর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায় একদল ছাত্র। তাদের অভিযোগ ছিল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি হচ্ছে, আ বর্তমান উপাচার্য মুহাম্মদ অািল অািলয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা উন্নয়েন জন্য কোনও কাজই করেননি। যদিও প্রায় প্রতি বছর ছাত্র ভর্তির সময় অালিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে একদল ছাত্র অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করে, এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে, এই আন্দোলনের পিছনে কিছু রাজনৈতিক ইন্ধনের কথাও কানাঘুষো শোনা যায়। ছাত্রদের সেই আন্দোলনে যারা পুরোধা ছিলেন তারা যে সব ধোয়া তুলসী পাতা তা অবশ্য নয়। কারণ, যারা ছাত্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বহিষ্কৃত ছাত্র গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলও ছিলেন। তাই হয়তো নানা অপরাধের অভিযোগ ওঠা গিয়াসউদ্দিনের মতো ছাত্রদের উপস্থিতিতে এই বিক্ষোভ সেভাবে দানা বাধেনি। যদিও বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হয়, যখনই আলিয়াকে ঘিরে কোনও আন্দোলন বা বিক্ষোভে নামেন ছাত্ররা তখন গিয়াসউদ্দিনরা কেন সেখানে হাজির হয়ে পড়েন। কিন্তু, এবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন মাত্রা পেতে চলেছে রাজ্য প্রশাসন ব্যাপারে সক্রিয় হওয়ায়। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেটি রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা িশক্ষা দফতরের অধীন। তৃতীয়বার তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা িশক্ষা দফতরে রয়েছেন একজন পূর্ণ মন্ত্রী, গোলাম রব্বানি। রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়গুলিতে বিশেষভাবে নজর দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্ণ মন্ত্রী নিয়োগ করেছেন বলে অনেকের অভিমত। তবে, তা যে শুধু কথার কথা নয়, তা প্রমাণ হয়ে গেল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠনে।
নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা িশক্ষা দফতরের তরফের অতিরিক্ত সচিব এক নোটিশে শুক্রবার জানিয়েছেন, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক অনিয়ম, আর্থিক ও অ্যাকাডেমিক বিষয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে চার সদস্যের এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এক মাসের মধ্যে এই কমিটি তদন্ত রিপোর্ট দেবেন। তাতে রয়েছেন, মাদ্রাসা শিক্ষা ডিরেক্টরেটের ডিরেক্টর আবিদ হোসেন, রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা ডিরেক্টরটের ডিরেক্টর মৃন্ময় বিশ্বাস, রাজ্যের অর্থ দফতরে বাজেট শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি দুর্গাপ্রসন্ন মণ্ডল, অর্থ দফতরের অভ্যন্তরীণ অডিট অফিসার সমীরণ রায়। রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত সচিবের জারি করা নোটিশে আরও বলা হয়েছে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও অন্যান্য আধিকারিকরা প্রয়োজনীয় ফাইল, তথ্য সরবরাহ করবেন এই তদন্ত কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য।
সেই সঙ্গে আরও বলা হয়েছে, এই নোটিশ জারির এক মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পূর্ণ করে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। বিস্তারিত রিপোর্ট জমা পড়লে তা পরখ করার পর এ ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্রের খবর, এ বছর বাজেটে আলিয়া বিশ্ববিদ্যারয়ের জন্য যে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এই তদন্ত শেষ হলে তবেই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে খরচের জন্য দেওয়া হবে। অন্যদিকে, এই তদন্ত রিপোর্টে বর্তমান উপাচার্য মুহাম্মদ আলি কোনওভাবে দোষী প্রমাণিত হলে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পাল্টানো হতে পারে। তবে, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে চার সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট কী বলছে তার উপর। তার জন্য একমাস অপেক্ষা করতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct