শুভ বিশ্বাস, ভাঙড়: এ যেন এক ঘরে ফেরার গল্প, যা যে কোন হিন্দি সিনেমার চিত্রনাট্যকে হার মানাবে। গল্পটা শুরু হয়েছিল অনেকদিন আগে, শেষ হল ঈদের দিনে। ঈদের সকালে ঘরে ফিরল বছর ৬০ এর এক বৃদ্ধা, সৌজন্যে কাশিপুর থানার ওসি সমরেশ ঘোষ। গত কয়েকদিন ধরে ভাঙড়ের পোলেরহাটে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছিল ৬০ বছর বয়সের এক অজ্ঞাত পরিচয় এক বৃদ্ধের। মুখে মাস্ক নেই, তার ওপর অজ্ঞাত পরিচয়। ফলে করোনা আতঙ্কে কেউ আশেপাশে ঘেঁষেননি। বুধবার বিকালে তখন সেখানে ঈদের ডিউটি করছিলেন কাশীপুর থানার ওসি সমরেশ ঘোষ। ওই ভদ্রলোককে কাছে ডেকে নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেন ওসি সমরেশ। নাম ঠিকানা জোগাড় করে খবর দেওয়া হয় তাঁর বাড়িতে।অসুস্থ ভবঘুরেকে শুধু উদ্ধার করা নয়, হাত পা ধুইয়ে, খাবার খাইয়ে, শরীরের পুরনো নোংরা ও ছেঁড়া জামা কাপড় বদলে, নতুন জামাকাপড় পরিয়ে বাড়ি পৌঁছল পুলিশই। অবশেষে পরিবারের লোক এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম প্রদীপ পান্ডে (৫৯), বাড়ি উত্তর ২৪ পরগণার গাইঘাটা থানা এলাকার বেরি গ্রামে। ঈদের সকালে এমনই এক মানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল ভাঙড় বাসী।
প্রদীপের ভাই সন্দীপ কুমার পান্ডে জানিয়েছেন বছর তিরিশ আগে তাঁর দাদার মানসিক অস্থিরতা শুরু হয়। লেখা পড়া জানা, ক্লাব সংগঠন চালানো দাদা হঠাৎ করে ভুল বকা শুরু করেন। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ায় ঠিকমত চিকিৎসা মিলছিল না। এরপরই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রদীপ বাবু। গত ৬ মে হঠাত বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যান তিনি। ৯ তারিখ গাইঘাটা থানায় মিসিং ডায়েরী করেন পরিবারের লোকেরা। যদিও তাঁর কোন খোঁজ মেলেনি। অবশেষে বুধবার কাশীপুর থানার সৌজন্যে নিজের পরিবারের লোকেদের কাছে যেতে পেরে খুশি প্রদীপ বাবু। পুলিশের এমন ভূমিকায় প্রশংসা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমন ভাল কাজের শরিক হতে পেরে খুশি কাশিপুর থানার আধিকারিকরা । কাশিপুর থানার ওসি সমরেশ ঘোষ বলেন. আতঙ্কিত না হয়ে মানুষের সচেতন ও মানবিক হওয়া প্রয়োজন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct