মোহাম্মাদ সানাউল্লাহ, বীরভূম: নওয়াপাড়া অঞ্চলে ভুয়ো বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা তছরুপের পর, এবার অন্যের একাউন্ট থেকে টাকা তোলার অভিযোগ রূপশ্রী কাণ্ডে। ঘটনাটি ঘটেছে নলহাটি দু’নম্বর ব্লকের বিড়োলচৌকি গ্রামে। ওই গ্রামের গৃহ বধূ মাহেরা বেবি অভিযোগ তোলেন পাশের ভগলদিঘী গ্রামের রহামা বিবি ওরফে ফেন্সি তার কাছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর চাই। মাহেরা বিবির সঙ্গে সম্পর্ক থাকায় রহমা বিবি ফেন্সি বলে তার ভাসুর মুম্বাই থেকে একাউন্টে টাকা পাঠাবে। কারণ রহামা বিবির একাউন্ট দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায় অ্যাকাউন্টে কাজ করছে না। একাউন্ট দেওয়ার পর মাহেরা বিবির একাউন্টে টাকা আসে।
তারপর রহামা বিবি ফেন্সি, মাহেরা বিবিকে ২৫০০০ টাকা তুলে দেওয়ার অনুরোধ করলে সে পুরো টাকাটাই রহামা বিবি ফেন্সিকে তুলে দেয়। নওয়াপাড়া অঞ্চলের রূপশ্রী প্রকল্পের ২৫০০০ টাকা তছরুপের ঘটনা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ার আবহে মাহেরা বিবির সন্দেহ হয় ২৫০০০ টাকা? সেই মতো মঙ্গলবার মাহেরা বিবি ব্যাংক থেকে পাশ বই আপডেট করেন। পরিচিত ব্যক্তিকে আপডেট বই দেখালে সেখানে জানতে পারে একাউন্টে রূপশ্রী প্রকল্পের ২৫০০০০টাকা ঢুকে ছিল। সেই টাকাটায় খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন মাহেরা বিবি। সেকথা মঙ্গলবার রহামা বিবি ফেন্সি কে জানাতেই সে বলে তার ভাসুর ঐ একাউন্টে টাকা পাঠিয়েছে। একাউন্টের আপডেট দেখালে তিনি জানান ,ব্লক অফিসে কোনো সমস্যা হলে তার ভাসুর সামলে নেবেন।
প্রসঙ্গত ২০০৩ সালে বিয়ে হয়ে গেছে মাহেরা বিবির। তার দুই কন্যা সন্তানও আছে। ১৮ বছর বিবাহিত জীবনে এই প্রথম প্রতারিত হলেন বলে জানান মাহেরা বিবি। তাছাড়া অবৈধ টাকার দায় কে নেবে? সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা অবৈধ ভাবে তছরুপের বিষয় নিয়ে নলহাটি দু’নম্বর ব্লক অফিসে রহমা বিবি ফেন্সির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা করেন মাহেরা বিবি। ভগলদিঘী গ্রামে রহামা বিবি ফেন্সির বাড়িতে সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা গেলে অভিযুক্তর মা চামেলি বিবি বলেন ,আমার মেয়ে বাড়িতে নেই। বান্দখালা গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে আছে। মাহেরা বিবি আমার মেয়েকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমরা এ ব্যাপারে কিছই জানি না।
ঘটনায় নলহাটি দু নম্বর ব্লকের বিডিও হুমায়ুন চৌধুরী বলেন ,এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে ,একের পর এক রূপশ্রী প্রকল্পে এমন বেনিয়মের জন্য দুই বিভাগীয় তদন্তকারী অফিসার যেখানে আছে। সেখানে ব্লক এলাকা জুড়ে ঠিক আর কত এরকম ভুয়ো সরকারি প্রকল্পে আর্থিক তছরুপ হয়েছে সেটাই দেখার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct