নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর: ঝুপড়ি ঘরেই দিনগুজরান করছিল অসহায় দম্পতি।তারমধ্যেই এক নিমেষে ঘরের প্রদীপ নিভে হল অন্ধকার। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে চিকিৎসার অভাবে গৃহকৃর্তা আনেশ মারা যান। তাদের একটি মাত্র কন্যা সন্তান বিয়ের পরে সেও স্বামী নিয়ে বহুবছর ধরে ভিন রাজ্যেই বসবাস শুরু করেছে। গত চারদিন আগে স্বামী মারা যাওয়ায় শূন্য পরিবারে অসহায়তার মধ্যে দিন গুজরান শুরু করেছে ফাতেমা বেওয়া (৫৫)।
মালদহের চাঁচল-১ নং ব্লকের ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর কালিগঞ্জে রয়েছে তাদের এক চিলতে ঝুপড়ি কুড়ে ঘর। গত চার দিন আগে স্বামী আনেসের মৃত্যুতে দিশেহারা বৃদ্ধা ফাতেমা। পুত্র সন্তান থাকলেও বেঁচে থাকার তাগিদ থাকত বলে প্রতিবেশীরা আক্ষেপ করছেন। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় স্বামীর শ্রাদ্ধ সম্পন্ন হয়েছে।তবে পরবর্তীকালে বেঁচে থাকার লড়াই টা যে কত কঠিন।সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে ও অসহায় বৃদ্ধার।একটি মাত্র ঝুপড়ি ঘর ছাড়া কিছু নেই!নেই চাষের জমিও।মেরামতের অভাবে বর্ষায় নড়বড়ে হয়েছে টিনের বেড়া বিশিষ্ট টালির ছাউনি ঘরটিও।কখন হুড়োমুড়িয়ে ছাউনি পড়বে,সেই আশঙ্কা করছে প্রতিবেশীরা।স্বামী আনেস আলী দিনমজুরী করেই সংসার চালাত। তারপরেই জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে শয্যাসায়ী ছিল। টাকার অভাবে গ্রামেই চলত চিকিৎসা।অবশেষে অবসান ঘটে। অসহায় বৃদ্ধা ফাতেমা বেঁচে থাকার জন্য কাতর আবেদন করেছেন বিধবা ভাতার জন্য। ভাতা জুটলেও হয়তো বাকিটা জীবন স্বস্তিতেই কাটবে।নইলে পথে নেমে ভিক্ষা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় থাকবে না।
ফাতেমা বলেন, রেশনে যা পান, তা দিয়ে চলে যায় দিন তিনেক।তবে সিংহভাগ সময় প্রতিবেশীদের কাছে হাত পাততে হয়।সরকার যদি বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করে দেয় তবে বেঁচে থাকার আলো দেখব।
সম্প্রতি আবাস যোজনা তালিকায় নাম এসেছে। পঞ্চায়েতের খামখেয়ালিপনায় যেন বঞ্চিত না হয় সেই আবেদন রাখছেন বিধবা। প্রতিবেশী মিনসারুল হক জানান, বৃদ্ধার স্বামী গত হওয়ার পর থেকে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বাড়িতে তার কেউ নাই।একাই জীবনযাপন করছে। বিধবা ভাতা মিললেও আশার আলো দেখবে সে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য নজেমুল হক জানান,ওই বৃদ্ধার দুর্দশার কথা শুনেছি। পঞ্চায়েত থেকেও চেষ্টা হচ্ছে। চাঁচল-১ নং ব্লকের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য্য আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, আবেদন করলেই গুরুত্ব সহকারে বিধবা ভাতা করে দেওয়া হবে। জাতীয় পরিবার সহায়তা প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা যায় কিনা সেটাও দেখা হবে।পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে শীঘ্রই যেন সমব্যথী প্রকল্পের টাকা পান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct