আপনজন ডেস্ক: একুশের বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল বিজেপি প্রথম থেকেই কোমর বেঁধে শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে লেগেছে। রাজ্যপালের ভাষণ থেকে শুরু করে বাজেট পেশ সব ক্ষেত্রেই তৃণমূলকে বিদ্ধ করার দিকেই এগিয়ে চলেছে। কিন্তু তার মোকাবিলায় এবার পরিকল্পনামাফিক ভাবে এগোতে চায় তৃণমূল। ইতিমধ্যে তৃণমূল নেত্রী তার দলের বিধায়কদের নিয়ে বিধানসভায় সড়গড় হওয়ার জন্য বেশি করে লাইব্রেরিতে পড়াশুনার কথা বলেছেন। এবার বিজেপিকে ধরাশায়ী করতে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার কালীঘাটের বাড়িতে বিশেষ বৈঠক করেছেন বলে সূত্রে জানা গেছে। তবে, শুধু বিধানসভায় বিজেপিকে মোকাবিলা নয়, রাজ্যে উপনির্বাচন না হলে বিধান পরিষদ নিয়ে কীভাবে এগোবে দল তা নিয়েও প্রশান্ত কিশোরে সঙ্গে এক প্রস্থ আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিন প্রায় ঘণ্টা তিনেক প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে মমতা বৈঠক করেন তার কালীঘাটের বাড়িতে। সূত্রের খবর সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আগামীতে তৃণমূলের কী কী কর্মসূচি নেওয়া উচিত তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়ে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে মমতার যে সব প্রকল্প মানুষের মনে দাগ কেটেছে সেগুলোকে কীভাবে ফের জনপ্রিয় করা যায় তার ছক কষা শুধু নয়, সময় বিশেষে নতুন নতুন কর্মসূচি নিয়ে বিজেপিকে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে না দেওয়ার কৌশল নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে দলের জেলা স্তরের সাংগঠনিক পরিকাঠামো বদল করা হবে বলে সূত্রের খবর।
মুখ্যমন্ত্রী ফের ঘোষণা করেছেন, দুয়ারে সরকার কর্মসূচি ফের শুরু হবে। সেই কর্মর্সূচিতে যেভাবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে মানুষ ভিড় বাড়িয়েছে এবারেও তাতে যেন কোনও খামতি না থাকে সেটাই লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াবে। এক সময় ‘দিদিকে বলো’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মানুষের অভাব অভিযোগ জানানোর সেই সুযোগ যাতে খুব সহজ ভাবে মানুষ করতে পারে তাই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির উপর জোর দেওয়া হতে পারে।
সূত্রের খবর, দিদিকে বলো কর্সমূচিতে তৃণমূলের বহু জেলা েস্তরের নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছে সাধারণ মানুষ। সেগুলোকে গুরুত্ব দিতে চায় দল। যাতে কোনওভাবেই দলের জেলার নেতা মানুষের উপর এমন ভ্যবহার না করেন তাতে তারা অসন্তুষ্ট হন, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে পিকে। তাই এবার থেকে দলের মধ্যে ‘এক পদ, এক নীতি’ কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর মমতা। আর তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে আসতে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদেরকে বিশেষ অগ্রিাধিকার দেওয়া হতে পারে। তাদের কাঁধে দলের প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তাই জেলা স্তরের সংগঠনে এবার বড় ধরনের পারিবর্তন আনার সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা করা হবে একেবারে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে।
সামনে পুরসভার ভোট। তারপর রয়েছে ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপরেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক রদবদলের আবহেই প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচনের সময় দলের নেতাদের যে রিপোর্ট কার্ড তৈরি হয়েছে তার ভিত্তিতে দলের সাংগঠনিক কাঠামো বদল করা হবে।
এমনকী বিধান পরিষদ গঠিত হয়ের তাতে কারা থাকবে তার তালিকা তৈরি করা নিয়েও এ প্রস্থ আলোচনা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বিধান পরিষদ বিল বিধানসভায় পাশ হলেও চূড়ান্ত অনুমোদান পাওয়ার দেরি রয়েছে। তার আগেই পুরো তালিকা তৈরি করে রাখতে চায় তৃণমূল। সেক্ষেত্রেও ‘এক পদ, এক নীতি’কেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সব ক্ষেত্রেই যে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্ক প্রসূত পরিকল্পনামতো কাজ হবে তা পরিষ্কার হয়ে উঠেছে শুক্রবারের বৈঠকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct