আপনজন ডেস্ক: আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বলেছেন, দেশের নিয়ন্ত্রণ তালিবানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। আফগান প্রেসিডেন্ট এমন এক সময় এই মন্তব্য করলেন যখন তালিবানের হাতে আফগানিস্তানের বহু জেলার পতনের খবর প্রকাশ হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যখন দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের ইতি টেনে সব সেনাকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে, ঠিক তখনই আফগানিস্তানজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। যুদ্ধবিরতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তালিবান যোদ্ধারা পুরোপুরি সামরিক বিজয়ের দিকে মনোনিবেশ করেছে এবং প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিকে হটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এ যোদ্ধারা কিছুদিন ধরেই কাবুলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আফগান প্রেসিডেন্ট বলেন, তালিবান যদি মনে করে আমরা আত্মসমর্পণ করব তাহলে আগামী ১০০ বছরেও তাদের সে আশা পূরণ হবে না। যদিও আফগানিস্তানের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, আশরাফ গনি সরকার বিনাযুদ্ধে একের পর এক জেলা তালিবানের হাতে তুলে দিচ্ছেন। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয় যাতে লেখা ছিল, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাদাখশান প্রদেশের কয়েকটি জেলা তালিবানের হামলার আগেই খালি করে দেওয়া হয়েছে। তালিবানের মুখপাত্ররা সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যমগুলোতে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে প্রচার করছেন। এই ভিডিওতে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে তালিবানের কাছে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে জোর দিয়ে বলেছেন, আত্মসমর্পনের কোনো ঘটনা ঘটবে না বরং এখন শক্তিমত্তা, প্রত্যয় ও জাতীয় সংহতি’ প্রদর্শনের সময় এসেছে।
তিনি বলেন, সকল রক্তপাত ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার তালিবানকে বহন করতে হবে। এদিকে আফগানিস্তানের বিভিন্ন স্থানে তালিবানের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার দেশটির সরকার অন্তত ৮০ জেলার নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। যদিও তালিবান দাবি করেছে তারা ১৫০টির বেশি জেলা দখল করেছেন।
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ হানিফ আতমার কাবুলে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, এসব জেলার কোনো কোনো জেলা তালিবানরা জোর করে দখল করেছে এবং কোনো কোনো জেলা থেকে সরকারি সেনাদের ‘কৌশলগত কারণে’ সরিয়ে আনা হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct