আপনজন ডেস্ক: রাজ্যের নবগঠিত বিধানসভার প্রথম বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে শুক্রবার। প্রথম দিন থেকে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের বিধায়কদের লাগাম টেনে ধরছে জোরকদমে। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি যাতে প্রথম দিন থেকেই কল্কে পেতে না পারে তার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে দলীয় বিধায়কদের প্রতি হুইপ জারি করা হয়েছে বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে সবাইকে হাজির থাকার জন্য। আর এই হাজির থাকা বাধ্যতামূলক জানিয়ে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ২০৯জন বিধায়ককে এসএমএস করে জানান দেওয়া হয়েছে।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দুই তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে রেকর্ড মার্জিনে জিতে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই বিধানসভার মধ্যে বিজেপি কোনও ধরনের প্রভাব সৃষ্টি করতে না পারে তার জন্য আগে ভাগেই সতর্ক পদক্ষেপ নিচ্ছে তৃণমূল। আর বিপুল ভোটে জিতে আসায় এক তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া তৃণমূল কংগ্রেস দলের বিধায়কদের সবাইকে উপস্থিত করিয়ে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতে চাইছে। তাই বিধানসভার প্রথম দিনেই ক্ষমতা প্রদর্শনের কোনও সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না তৃণমূল। সেই সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। তাই বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে কোনও ফাঁকফোকর রাখতে চাইছে না তৃণমূল।
উল্লেখ্য, সদ্য বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ২১৩ জন বিধায়ক। তার মধ্যে মারা গিয়েছেন খড়দহের বিধায়ক কাজল সিংহ ও গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। এছাড়াও ভবানীপুর বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আর স্পিকার সর্বদাই দলীয় হুইপের বাইরে থাকেন। তাই বর্তমান ২০৯ বিধায়কের প্রতি হুইপ জারি করা হয়েছে শুক্রবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে হাজির থাকার জন্য।
সূত্রের খবর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দলীয় বিধায়কদের এসএমএস পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, শুক্রবার দুপুর ২টোয় রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে অধিবেশন শুরু হবে। তার অন্তত ১৫ মিনিট আগে, অর্থাৎ দুপুর পৌনে ২টোর মধ্যে যেন প্রত্যেক বিধায়ক নিজের নির্ধারিত চেয়ারে পৌঁছে যান। শাসকদলের এই সিদ্ধান্তকে একপ্রকার প্রতীকী শক্তি প্রদর্শন হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
অন্যদিকে, বিজেপি তাদের বিরোধী দলের শক্তি প্রদর্শনে কোমর বেঁধে নামতে চাইছে। তাই বৃহস্পতিবার দিল্লি গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর কিছুদিন ধরেই শুভেন্দু সহ বিজেপির তরফে বিধানসভা অধিবেশনে সরব হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তার উপর বিজেপি থেকে মুকুল রায় তৃণমূলে চলে আসায় বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের সংঘাত চরমে ওঠার উপক্রম। অন্যদিকে, দীর্ঘদিনের রীতি অনুযায়ী রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে ভাষণ লিখে দেওয়া হয় সেটাই সাধারণত রাজ্যপাল বাজেট অধিবেশনে পড়ে থাকেন। কিন্তু বাদ সেধেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। রাজ্যেরে লেখা ভাষণ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন রাজ্যপাল। তাই রাজ্যপালের ভূমিকা এবার বাজেট অধিবেশনে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। যদি রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের প্রতি বিরূপ কোনও মন্তব্য করেন সেক্ষেত্রে যাতে একযোগে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়করা সরব হতে পারেন তার জন্য প্রস্তুত থাকতে আগাম সতর্কতা হিসেবে হুইপ জারি করা হয়েছে শাসক দলের তরফ থেকে। পরিস্থিতি বলছে, বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনকে কেন্দ্রে করে ব্যাপক সরগরম হতে পারে বিধানসভা কক্ষ। সেই সঙ্গে আগামীতে রাজ্যে রাজনৈতিক সংঘাত কোন দিকে গড়াবে তারও ইঙ্গিত পাওয়া যাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct