মাহাবুব খান, কলকাতা: ১৯৯২ সালে বৃহৎ পশ্চিম দিনাজপুর জেলা ভেঙে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর নামে দুইটি জেলায় বিভক্ত হয়। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাবাসী এই মুভমেন্ট এ ব্যাপক সাড়া দিচ্ছে।তারা জানায়- এতদিনেও জেলা বিভক্ত হওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য সাধন হয়নি, ওই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প। বর্তমান সরকার একবছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেছেন। কিন্তু কোন মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে হয়তো ভাবেন নি। অথচ পার্শ্ববর্তী জেলা গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজ ও রয়েছে। জেলার চিকিৎসা ব্যাবস্থা অত্যন্ত বেহাল। বড়ো হাসপাতাল বলতে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি আর গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। কিন্তু একটু জটিল রোগে ট্রান্সফার করে দেওয়া হয় মালদহ, রায়গঞ্জ, শিলিগুড়ি অথবা কলকাতায়। এবং রেফার রোগীদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতেই প্রাণ হারাতে হয়, এই ঘটনা রোজকার। কোনো জটিল অপারেশন ও হয় না হাসপাতাল গুলোতে। ফলে নার্সিংহোমে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। বর্তমান সময়ে গ্ৰামের মানুষের মধ্যে হাসপাতালে যাওয়ার অনিহা সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যাবস্থার অবনতি এর অন্যতম কারণ। দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রধানত দুইটি হাসপাতাল কিন্তু কোন জটিল অপারেশন বা স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অন্য জেলায় যেতে হয়। এমনকি জেলায় সরকারি হাসপাতালে কোনও এসআরআই মেশিন নেই বলে অভিযোগ। করোনা আবহ প্রায় ২ বছর হয়ে গেলেও , দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এখনো একটিও আরটিপিসিআর ল্যাবের কাজ সম্পন্ন হয়নি। ফলে জেলার হাসপাতালের প্রতি মানুষের অনীহা বেড়েছে।
তাই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কিছু ছাত্রছাত্রীরা একটা সোশ্যাল মিডিয়ায় “দক্ষিণ দিনাজপুরে মেডিক্যাল কলেজ চাই” বলে একটা গ্রুপ তৈরি করে ইতিমধ্যেই জেলায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন। তারা বিশ্বাস করেন নতুন প্রজন্মের দাবি আদায়ের প্রধান পন্থা সোশ্যাল মিডিয়া। তাই তারা সোশ্যাল মিডিয়ার সরব হওয়ার অবলম্বন করেছেন। ইতিমধ্যেই ৩ দিনের মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ যুক্ত হতে শুরু করেছেন। গ্রুপের অ্যাডমিন রাইহান সিদ্দিক জানান, ‘যেখানে হু বলছে ডাক্তার এবং রোগীর আদর্শ হার ১ : ১০০ হওয়া দরকার,সেখানে এই জেলার ডাক্তার এবং রোগীর হার ১ : ১৭৮৫৮। তাই জেলায় মেডিক্যাল কলেজ হলে ডাক্তারের সংখ্যা বাড়বে, সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারও থাকবেন। ফলে সাধারণ মানুষও এর ফল ভোগ করতে পারবেন।’ গ্রুপের অন্য একজন অ্যাডমিন পারভেজ আলী শাফকির জানান. কিছুদিন আগে রাজ্যে ৬ টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেখানে র জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরের নাম না থাকায় হতাশ করেছে জেলবাসীকে।
এউ গ্রপের পক্ষে জানানো হয়, প্রথম অবস্থায় গ্রূপ থেকে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোতে গণ ইমেইল করা হবে। তারপর ভবিষ্যতে দরকার হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct