ফৈয়াজ আহমেদ: ভারতীয়দের প্রিয় পানীয়ের শীর্ষে থাকে চা। মিনটেল-এর ২০১৭ সালের সমীক্ষা বলছে, সে বছর ৬৭৮,২০০ টন প্যাকেজড্ চা বিক্রি হয়েছে এদেশে, যা চিনের ঠিক পরেই।
এদেশের গ্রামে-শহরে অলিতে গলিতে রয়েছে চায়ের দোকান। বিশ্বমানের চা উত্পন্ন হয় ভারতে। দার্জিলিং বা আসাম চায়ের খাতির পৃথিবীজোড়া। প্রতি ১ কাপ কফি পিছু ৩০ কাপ চা খায় এদেশের মানুষ। অথচ ক্যাফে তৈরির সময় আমাদের দেশেও প্রাধান্য পেল কফিশপ।
শুনতে অবাক লাগলেও অনেকেই এই ব্যবসা করে সফলতার মুখ দেখেছেন। তাহল চলুন দেখিয়ে দেই প্রতি দিন কমপক্ষে ২০০০ টাকা চা পাতা বিক্রি করে কিভাবে আয় করবেন। শুরুতে আপনার এলাকায় যে সকল চায়ের দোকান আছে প্রতিদিন একবার করে দোকান গুলি পরিদর্শন করুন। এবং এর একটি তালিকা প্রস্তুত করুন।
যেখানে চা দোকানদারের নাম, দোকানের নাম ও মোবাইল নম্বর লিখে রাখুন। আপনি ৫০ টি দোকানে প্রতিদিন একবার করে ১৫ দিন নিয়মিত যান। দেখবেন কমপক্ষে ৩০ টি দোকান আপনার চা পাতা কেনার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। তারা যদি অন্য চা পাতার তুলনায় আমাদের সরবরাহকৃত চা কম মূল্যে পায় তবে অবশ্যই কেনার জন্য আগ্রহ দেখাবে। আর প্রতিদিন ১০০ দোকানে যদি আপনি ৫০০ গ্রাম করে চা পাতা বিক্রি করেন, তবে আপনার বিক্রয় হবে দৈনিক ৫০ কেজি । প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা লাভ হলে ৫০ কেজিতে লাভ হয় ২০০০ টাকা । আর প্রতি মাসে লাভ হবে ৬০০০০ টাকা। এভাবেই ২০০০ টাকা থেকে আস্তে আস্তে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চায়ের ব্যবসা থেকে আয় করা সম্ভব।
গ্রামে বসে চা পাতার ব্যবসা করার উপায়:
এ ব্যবসা মূলত সহজ এবং কম পুঁজির জন্য এ সময়ের সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠেছে। কারণ চা পাতার ব্যবসায়িক চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। বর্তমানে একটি লাভজনক ব্যবসা হল চা পাতা। এক গবেষণায় দেখা যায় গড়ে প্রতিদিন একজন মানুষ কমপক্ষে ৮ কাপ চা পান করে।
তাতে প্রতিদিন আনুমানিক মোট ২১৬০০০০০০০ কাপ চা খাওয়া হয় এই পশ্চিমবাংলায়। এর জন্য শহর কিংবা ধনী এলাকর দরকার পড়ে না।
গ্রাম কিংবা শহর সকল জাংগায় চা পাতার ব্যবসা করে প্রচুর ইনকামের সুযোগ আছে।
পাইকারী ক্রয় করবেন কিভাবে?
আপনার এলাকায় চা পাতার ব্যবসা করার জন্য কোলকাতার ডিলারের কাছ থেকে পাইকারি দাম বস্তা আকারে বা প্রতি প্যাকেট হিসেবে কিনুন। বড় বড় অনেক চা কম্পানি চা পাতার পাইকারি বাজারের মূল্য অনুযায়ী ক্ষুত্র উদ্যক্তার কাছে চা পাতা বিক্রি করছে। যাতে করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যক্তাদের চা পাতার ব্যবসা করা সহজ হয়। গ্রাম বাংলার মানুষ ক্ত বেকারত্বের অভিশাপ মুক্ত হয়ে জীবন গড়ার উপায় হিসাবে চা পাতার ব্যবসা কে বেছে নেয়ার সুযোগ পায়।
চা পাতার প্রকারভেদ:
চা পাতা অনেক প্রকারের হয়। সম্পূর্ণ পাতার চা, আংশিক ছেঁড়া পাতার চা, অপেক্ষাকৃত বেশি অংশ ছেঁড়া, গুড়া বা ডাস্ট চা এগুলো থেকেই টি-ব্যাগের উৎপত্তি।
এ গুলো মূলত এর সাইজ বা আকার অনুসারে পার্থক্য হয়। বিওপি, পিডিএফ, সিডি, ডাস্ট, জিবিওপি ইত্যাদি। এর মধ্যে জিবিওপিটি বেশি চলে। জিবিওপি চায়ের বৈশিষ্ট হলো: চায়ের কেটলিতে একটু বেশি সময় নিয়ে লিকার ছাড়ে। এবং ৩-৫ ঘন্টা লিকার দিয়ে থাকে।
এতো গেলো গুনাগুনের ভিত্তিতে পাথর্ক্য। এবার আসি বাজারে কত রকমের প্যাকেটে চা পাতা বিক্রি হয়। বিভিন্ন চা কম্পানি নিজ নিজ নামে চা পাতা ব্যান্ডিং করে যেমন, লিপটন, তাজমহল, টাটা, পতাকা, ইত্যাদি।
ডিলার হওয়া বা পাইকারী ক্রয়ের নিয়ম:
পাইকারী ক্রয়ের জন্য সর্বনিম্ন ৫০ কেজি চা পাতা বুকিং করা যায়। তবে স্যাম্পল হিসেবে ২০ কেজি নেওয়ার সুযোগ আছে।
অথাবা ডিলার হতে চাইলে ডিলারশিপের বা চুক্তি করতে পারেন।
খোলা চা পাতা বস্তা আকারেও কিনতে পারবেন। প্রতি বস্তা ৫৫ কেজির হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct