আপনজন প্রতিবেদক: “রবীন্দ্র-নজরুল : এই সময় “ বিষয়ের উপরে আন্তর্জাতিক স্তরীয় একদিনের আন্তর্জালিক আলোচনাচক্র অনুষ্ঠিত হলো কালিয়াচক কলেজে। দেশ-বিদেশের প্রায় দেড় শতাধিক প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক অধ্যাপিকা রবীন্দ্র নজরুল গবেষক ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক শিক্ষিকা অংশগ্রহণ করেন এই আলোচনাচক্রে। বাংলাদেশের ঢাকাস্থ স্বনামধন্য কবি, সাহিত্যিক, গবেষক প্রাক্তন অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুল হুদা, ইরান থেকে অধ্যাপক মন্দনা কে এম , গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তি ছেত্রী বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক সুমিতা চক্রবর্তী গৌড়বঙ্গ ইউনিভার্সিটির ও বাণিজ্য বিভাগের ডিন ও বাংলার অধ্যাপক বন্দ্যোপাধ্যায় এই আলোচনাকে মহিমান্বিত করেন। এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালিয়াচক কলেজের অধ্যাপক ডক্টর নজিবর রহমান। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৌরভ পাল সূচনা বক্তব্য দেন ডক্টর শচীন্দ্রনাথ বালা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গজেন বারুই , সহযোগিতায় ডক্টর প্রবীর পাল, ডক্টর মুজতবা জামাল , রিতব্রত গোস্বামী, পুলক সাহা। সভাপতির ভাষণে অধ্যক্ষ নাজিবর রহমান উল্লেখ করেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেভাবে রাখি বন্ধন এর মাধ্যমে প্রিয় দেশের মানুষে মানুষে সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে মেলবন্ধন সৃষ্টির কাজে ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন , আজকের দিনে ছাত্র-যুব সহ সকল সচেতন মানুষ কে এই কাজে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণকরে সমাজকে সাম্প্রদায়িক বিষ থেকে রক্ষা করা দরকার। আজকের দিনে বাংলা বিচ্ছেদ বা ভারত বিখন্ড করনের প্রচেষ্টাকে সকলে মিলে ঠেকানো দরকার।বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম যেভাবে কান্ডারী হুঁশিয়ার কবিতায় দেশনায়ক এর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন বল ডুবিছে সন্তান মোর মার অর্থাৎ জাতিতে জাতিতে ধর্মে ধর্মে বিচ্ছেদ করা যাবেনা সকলকেই মায়ের সন্তান হিসেবে গ্রহণ করে ঐক্য বদ্ধ চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার। উদ্বোধনী ভাষণে গৌড় বঙ্গের উপাচার্য শান্তি ছেত্রী উল্লেখ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলাম এর যুগলবন্দী প্রচেষ্টা সমাজের বুকে বিভেদ কে পিছে ফেলে ঐক্যের সূত্র গেঁথে দিয়েছিলেন। জেলখানায় নজরুলকে অনশন প্রত্যাহার করার জন্য টেলিগ্রাম করে নজরুলের প্রয়োজনীয়তা কে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। কবি সাহিত্যিক মোঃ নুরুল হুদা দুই বঙ্গসন্তান রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল এর কাব্য প্রতিভার ও সমাজ চেতনার ধারাবাহিক আলোচনা করে আজকের দিনে তার গুরুত্ব যথার্থভাবে তুলে ধরেন যা গবেষকদের খোরাক হতে পারে। দুই বাংলার মানুষের অতি আপন হয়ে আছেন এবং থাকবেন রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সুমিতা চক্রবর্তী তার গবেষণা ধর্মী আলোচনার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলামের মধ্যে পারস্পারিক মিল এবং বৈপরীত্য তুলে ধরেন , কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে মতের অমিল থাকলেও তাদের মধ্যে কোন দিন বিভেদ তৈরি হয়নি। রবীন্দ্রনাথের দার্শনিক দূরদৃষ্টি নজরুলের বাস্তব মানব সংযোগ উভয়ই আমাদের জন্য পাথেয়। সৌরেন বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তব্যে রবীন্দ্রনাথ এর গভীর কাব্য প্রতিভা বিশ্বব্যাপী তার প্রভাব এবং নজরুল ইসলামের সাধারণ মানুষের প্রতি সহমর্মিতার অমরত্তের উপরে আলোকপাত করেন। আজকের সমাজে সেদিনের মতোই বিভেদকামী শক্তি জাগ্রত আছে তাকে পরাভূত করতে হলে চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য উচ্চ যেথা শির এর মতো পরিবেশ দরকার শির নেহারি তোমারি শিখর হিমাদ্রির মত দৃঢ়তা দরকার বলে মত প্রকাশ করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct