নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর: একশো দিনের মাটি কাটা প্রকল্পে দুর্নীতির পর আবার একই পঞ্চায়েত সদস্যের নামে অভিযোগ উঠলো কাটমানি নেওয়ার। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর দেওয়ার নাম করে কাটমানি নেওয়ার পাশাপাশি আঁধার লিঙ্ক ও জব কার্ড তৈরি করে দেওয়ার নাম করে হাজার হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার বিডিও-র দ্বারস্থ হন হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম রাড়িয়াল গ্রামের বাসিন্দারা।
অভিযোগ উঠেছে চাঁচল বিধানসভার অন্তর্গত তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃনমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য প্রকাশ দাসের বিরুদ্ধে। যদিও প্রকাশ দাস তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর করে দেওয়ার নাম করে জিও ট্যাকিংয়ের সময় বেনিফিশিয়ারিদের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা কাটমানি নিয়েছেন। টাকা না দিলে তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন ওই পঞ্চায়েত সদস্য। যারা টাকা দিতে পারেননি তাদের তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এমনকি এখন আধার লিঙ্ক ও জব কার্ড তৈরি করে দেওয়ার নাম করে হাজার হাজার টাকা বেনিফিশিয়ারিদের কাছ থেকে নিচ্ছে।
এই মর্মে মঙ্গলবার গ্রামবাসীরা হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লকের বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রকাশ দাসের বিরুদ্ধে। এদিন ব্লক গেটের সামনে ন্যায়ের দাবিতে অভিযুক্ত সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রদর্শনও করেন। কাটমানি নেওয়ার যারা প্রতিবাদ করছেন তাদের নাম বাদ দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।
যারা প্রকৃত পক্ষে ঘর পাওয়ার যোগ্য তাদের নাম তালিকায় নেই অথচ যাদের পাকা দ্বিতল, ত্রিতল বাড়ি রয়েছে তাদের তালিকায় নাম রয়েছে। এমনকি একই পরিবারের চার থেকে পাঁচজন সদস্যের নাম তালিকায় রয়েছে।
অমিত কুমার সাহা নামে এক অভিযোগকারি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর-এর জন্য কাটমানি নিয়েছে। জব কার্ডের জন্য আবার চাইছে। যাদের প্রকৃত দরকার তারা সুবিধা পাচ্ছে না। আবার যারা কাটমানি দিয়েছে তাদের একই পরিবারের সব সদস্যের নামেই ঘর চলে এসেছে। এটা তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হোক বলে দাবি।
অন্যদিকে আরেক অভিযোগকারী পায়েল খাতুন বলেন, পঞ্চায়েত সদস্য প্রকাশ দাস ঘর এবং জব কার্ডের জন্য কাটমানি নিচ্ছে। যারা দিতে পারেনি তালিকায় তাদের নাম নেই। আমরা স্বামী-স্ত্রী ও তিন নাবালক সন্তানকে নিয়ে কোনো রকমের একটি মাত্র কাঁচা ঘরে দিনগুজরান করছি। টাকা দিতে পারিনি তাই তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে যাদের পাঁকা বাড়ি রয়েছে তাদের নামে ঘর এসেছে। আমরা চাই এর সঠিক তদন্ত হোক এবং এর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এদিকে অভিযুক্ত প্রকাশ দাস কাটমানি নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, এই সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। গ্রামের মানুষকে জিজ্ঞাসা করলেই জানা যাবে আসল সত্য। যারা অভিযোগ করেছে তারা চক্রান্ত করে তাকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মানিক দাস বলেন, সংবাদ মাধ্যমের থেকে বিষয়টি জানলাম। অঞ্চল নেতৃত্বের কাছে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে দলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক বিডিও অনির্বাণ বসু জানান অভিযোগ পেয়েছি, খতিয়ে দেখা হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct