আপনজন ডেস্ক: পশ্চিমবাংলায় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি ‘নেট’ পরীক্ষা বা রাজ্য সরকারের কলেজ সার্ভিস কমিশন আয়োজিত ‘সেট’ পরীক্ষায় উক্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক। তাই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও জুনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবে নিয়োজিত হতে গেলে নির্ভর করতে হয় ‘নেট’ বা ‘সেট’-এর ফলের উপর। তবে, সর্বভারতীয় স্তরের পরীক্ষা নেট বা পশ্চিমবাংলার সেট-এ যে সমস্ত বিষয়ে পরীক্ষায় বসা যায় তার মধ্যে ফারাক আছে। নেট ও সেট পরীক্ষার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কোনও ইউজিসি অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাধারণ প্রার্থীরা ৫৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেলেই থেকে নেট পরীক্ষায় বসার সুযোগ পান। গত বছরের ‘নেট-২০২০’ পরীক্ষার ফলে দেখা গেছে মোট ৩০টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। তার মধ্যে রয়েছে আরবি বিষয়ও। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কলেজ সার্ভিস কমিশন পরিচালিত ‘সেট’ পরীক্ষায় আরবি বিষয়ে বসার সুযোগ নেই। দেখা গেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিষয়ে স্নাতকোত্তরে পড়ার সুযোগ রয়েছে। আর সেখান থেকে পাশ করে নেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন। যদিও, এদের কেউই ‘সেট’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণর ভিত্তিতে নিয়োজিত হননি বলে জানা গেছে।
এক্ষেত্রে জানা যাচ্ছে, সেট পরীক্ষায় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে সমস্ত বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে তার মধ্যে আরবি বিষয়টি নেই। ফলে, যারা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে আবেদন জানাতে চান তাদেরকে নেট উত্তীর্ণ হওয়া ছাড়া পথ নেই।
ইউজিসি িসূত্রা জানাচ্ছে, নেট-জুন, ২০২০ পরীক্ষায় আরবি বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর (অসংরক্ষিত) ৬০জন। তার মধ্যে জেআরএফ পেয়েছেন ৫জন। ওবিসি ৭৫ জন, তার মধ্যে ১১ জন জেআরএফ। সহ মোট ১৫২জন। মোট জেআরএফ ২৪জন।
অন্যদিকে, পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহার স্টেট ইউনিভার্সিটি সার্ভিস কমিশন অবশ্য সেখানকার কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ‘বিএসইউএসসি’তে আরবি অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিহার সে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় সার্ভিস কমিশনে আরবি ডিগ্রিধারীদের বসার সুযোগ করে দিলেও পশ্চিমবঙ্গের কলেজ সার্ভিস কমিশনের আপত্তি কোথায়? তাই পশ্চিমবঙ্গে ‘সেট’ পরীক্ষায় আরবি বিষয় না থাকার পিছনে ইউজিসি বা পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশনের ভূমিকা কী তথ্য জানার অধিকারে ইউজিসির কাছে তা জানতে চেয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলা হাইস্কুলের শিক্ষক তৌহিদ আহমেদ খান। আরটিআই অ্যাক্টে তিনি জানতে চেয়েছেন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি বিষয়ে স্নাতকোত্তরে ৫৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পাওয়া কেউ ‘সেট’ পরীক্ষায় বসার যোগ্য কিনা। সেই সঙ্গে তৌহিদ আহমেদ খান আরও জানতে চেয়েছেন, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা এমএম (যা এমএ-র সমতুল) তারা ‘সেট’ পরীক্ষায় বসার যোগ্য কিনা। গত ২০ মে অনলাইনে করা তার আরটিআইয়ের উত্তর জানতে চেয়ে গত ১১ জুন ইউজিসি ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের কলেজ সার্ভিস কমিশনের মেম্বার সেক্রেটারির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। যদিও এখনও কোনও চূড়ান্ত উত্তর পাননি তৌহিদ। তবে, আশায় আছেন, নেট পরীক্ষায় ৩০টি বিষয়ের মধ্যে আরবি যেমন আছে, তেমনি ‘সেট’-এ আরবি বিষয়ে পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাওয়া যেতে পারে। সেই আশায় দিন গুনছেন আরবি নিয়ে স্নাতকোত্তরে ৫৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct